Print Date & Time : 3 August 2025 Sunday 7:04 am

১ টাকা ২০ পয়সা ভ্যাট দিয়ে জিতলেন ১০ হাজার টাকা

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: খেলেন সমুচা। বিল হলো মাত্র ২৫ টাকা। এর ওপর ভ্যাট দিলেন এক টাকা ২০ পয়সা। আর এ ভ্যাট পরিশোধের বিপরীতে লটারিতে নগদ জিতলেন ১০ হাজার টাকা।

ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইসে (ইএফডি) চালান নিয়ে এই পুরস্কার জিতলেন চট্টগ্রামের মোহাম্মদ আল মারুফ। মারুফ নিজে একজন ছাত্র। সচেতন নাগরিক হিসেবে সমুচা খেয়ে ন্যূনতম ভ্যাট দিলেন। আর ইএফডি চালান সংরক্ষণ করে জিতলেন নগদ টাকা। গতকাল চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মারুফের হাতে পুরস্কারের চেক তুলে দেন কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন।

মারুফের মতো মাত্র ৯৭ টাকা ভ্যাট দিয়ে ১০ হাজার টাকার পুরস্কার জিতলেন চট্টগ্রামের মো. আজহারুল আনোয়ার (চানু)। তিনি চট্টগ্রামের একটি ক্যাফেটেরিয়ায় ৭৫০ টাকা খরচ করে ভ্যাট দিলেন ৯৭ টাকা। আর ইএফডি চালান সংরক্ষণ করে ১০ হাজার টাকার পুরস্কার জিতলেন তিনি।

একই দিন ভ্যাটদাতা মো. আজহারুল আনোয়ার চানুর হাতেও নগদ ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন।

পুরস্কার বিজয়ী ভ্যাটদাতা মোহাম্মদ আল মারুফ শেয়ার বিজকে বলেন, আমি একজন ছাত্র। ১ মে উত্তর পতেঙ্গার স্টিল মিল বাজার এলাকার নিউ মুন বেকারি অ্যান্ড সুইটমিট নামক রেস্তোরাঁ সমুচা খাই। ২৫ টাকা বিল দেয়, যাতে ভ্যাট দেয় এক টাকা ২০ পয়সা। রেস্তোরাঁয় থাকা ইএফডি মেশিনের চালান নেয়, যা আমার বাসায় সংরক্ষণ করি।

তিনি বলেন, ৫ জুন ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (ইএফডিএমএস) লটারি হয়। আমার কাছে থাকা ইএফডি চালানের নম্বর মিলিয়ে দেখি, যাতে চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে আমি ১০ হাজার টাকা জিতেছি। পরে চালানের কপিসহ পুরস্কারের জন্য আবেদন করি। যাচাই শেষে আজকে (গতকাল) পুরস্কার দেয়া হয়। এখন থেকে আমি সব সময় কেনাকাটার পর ভ্যাট চালান নেব। সবাই সচেতন হলে ভ্যাট ফাঁকি রোধ হবে।

চট্টগ্রাম ভ্যাটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ হালিশহর এলাকার সিইডিজেড ক্যাফেটেরিয়ায় ১০ মে ৭৫০ টাকা খরচ করে। এতে ভ্যাট দেয় ৯৭ টাকা। ওই ক্যাফেটেরিয়া থেকে তিনি ভ্যাট দেয়ার পর ইএফডি চালান নিয়েছেন। লটারির পুরস্কার ঘোষণার পর তিনি কূপনসহ আবেদন করেছেন।

নীতিমালা অনুযায়ী, বিজয়ীদের ইনভয়েস নম্বর, চালানের কপি, আইডি যাচাই শেষে গতকাল পুরস্কারের চেক দেয়া হয়েছে।

পুরস্কার দান অনুষ্ঠানে কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন সবাইকে কেনাকাটায় চালান সংগ্রহ করে লটারির জন্য সংরক্ষণ করার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে সব সচেতন নাগরিককে ভ্যাট দিয়ে দেশের উন্নয়নে অংশ নেয়ার অনুরোধ করেন।

‘স্বচ্ছ হবে ভ্যাট প্রদান, ইএফডিতে সমাধান’ স্লোগান সামনে রেখে এনবিআর ইএফডিএমএস থেকে ইস্যু করা চালানের ভিত্তিতে লটারির মাধ্যমে আর্থিক পুরস্কার নীতিমালা-২০২০ প্রণয়ন করে। নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতি মাসের ৫ তারিখ আগের মাসের ইএফডিএমএস থেকে ইস্যু করা ইনভয়েসের ওপর লটারি অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ জুন মে মাসের ইএফডিএমএস ইনভয়েসের ওপর লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

লটারিতে ১০১টি পুরস্কার রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একজন পাবেন এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার দুটি ৫০ হাজার টাকা করে, তৃতীয় পুরস্কার পাঁচটি ২৫ হাজার টাকা করে। চতুর্থ পুরস্কার ৯৪টি প্রতিটি ১০ হাজার টাকা করে।

ক্রেতাদের দেয়া ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনবিআর ঢাকা ও চট্টগ্রামে চারটি ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন স্থাপন করেছেন। চট্টগ্রামে ৫২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মেশিন বসানো হয়েছে।