শেয়ার বিজ ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৫০ সালে চরম পানি সঙ্কটে পড়বেন বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ।
জাতিসংঘভিত্তিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
‘দ্য স্টেট অব ক্লাইমেট সার্ভিসেস ২০২১: ওয়াটার’ শিরোনামে ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে পৃথিবীর পানির স্তর উদ্বেগজনক হারে নিচে নামতে শুরু করেছে, যা বিশেষভাবে নজরে এসেছে গত ২০ বছরে।
ভূপৃষ্ঠ, ভূপৃষ্ঠের ঠিক নিচের স্তর, বরফ ও তুষারে জমা পানির স্তর গত দু’দশকে যে হারে কমেছে, আগে কখনও এমন হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ডব্লিউএমও।
বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহ যদি দ্রুত এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ২০৫০ সালে পৌঁছানোর পর দেখা যাবে, ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ চরম পানিসংকটে পড়েছেন। তীব্র জলাভাব দেখা দেবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম অংশ, ভূমধ্যসাগর, উত্তর ও দক্ষিণ আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায়। এই সংকটে ভুগবে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়াও।
ডব্লিউএমওর মহাপরিচালক পেত্তেরি তালাস জানিয়েছেন, ভূগর্ভে মোট সঞ্চিত পানির মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ ব্যবহার করতে পারে মানুষ। বাকিটা ব্যবহার করা সম্ভব নয়, কারণ সেই পানি রয়েছে পৃথিবীর অনেক গভীরে।
ডব্লিউএমওর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত ২০ বছরে বিশ্বজুড়ে বন্যাঘটিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা তার আগের দু’দশকের চেয়ে বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ।
এ সম্পর্কে ডব্লিউএমওর প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘দ্রুতহারে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে গত ২০ বছরে বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা বেড়েছে ৭ শতাংশ। ঘন ঘন বন্যা ও তার ভয়াবহতা বাড়ানোর জন্য দায়ী এই আর্দ্রতা বৃদ্ধি।’
‘বন্যায় মৃত্যু ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে এশিয়ায়। এখানে বন্যার আগাম সতর্কতা জারির ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করে তোলার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর।
উল্লেখ্য, আগামী ৩১ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন সিওপি-২৬, শেষ হবে ১২ নভেম্বর। সম্মেলনে বৈশ্বিক পানি সংকটের বিষয়টি যেন আলোচনা করা হয়ে, প্রতিবেদনে সেই আর্জি জানিয়েছে ডব্লিউএমও।