শেয়ার বিজ ডেস্ক: দীর্ঘ দুই দশকের আলোচনার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও দক্ষিণ আমেরিকার অভিন্ন বাজার মারকোসুর বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। চুক্তির লক্ষ্য শুল্ক কমানো এবং রফতানি জোরদারের পাশাপাশি ভোক্তাকে কম মূল্যে আমদানিপণ্য কেনার সুযোগ করে দেওয়া। চুক্তির মধ্য দিয়ে ৮০ কোটি মানুষের অভিন্ন বাজার সৃষ্টি হবে, জনসংখ্যার বিচারে যা এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় বাজার। খবর: বিবিসি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের প্রধান জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেছেন, এটি ইইউ’র সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেও এমন একটি চুক্তি করে ইইউ প্রমাণ করেছে, আমরা ন্যায়ভিত্তিক বাণিজ্যের পক্ষে কাজ করি।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো এ চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছেন। তার ভাষায়, এটি সর্বকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
দক্ষিণ আমেরিকার কমন মার্কেট মারকোসুর চারটি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ে। অবশ্য শুরুতে ভেনেজুয়েলা এ জোটের সদস্য ছিল, ২০১৬ সালে অযোগ্য বিবেচনায় দেশটিকে বাদ দেওয়া হয়।
মারকোসুরের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অভিযোগ, ২০১২ সালে জোটভুক্ত হলেও বাণিজ্য, রাজনীতি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার-সংক্রান্ত বেশকিছু নিয়মনীতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি ভেনেজুয়েলা। নিকোলাস মাদুরোর সমাজতান্ত্রিক সরকার মারকোসুর সদস্যদের নিয়ম অনুযায়ী পালনীয় ১১২টি প্রস্তাব দেশটিতে আইন হিসেবে গ্রহণ করেনি। এদিকে ভেনেজুয়েলা জানায়, দেশীয় আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এসব প্রস্তাব গ্রহণে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
ইইউ ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তকরণের বিষয়ে গত বছরই আশাবাদী ছিল জার্মানি ও আর্জেন্টিনা। এক বছর থমকে থাকার পর গত বছর থেকে মারকোসুর-ইইউ মুক্তবাণিজ্য চুক্তি-সংক্রান্ত আলোচনা পুনরায় শুরু হয়। মারকোসুরভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মতের অমিল দেখা দেওয়ায় ইইউ’র সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি-সংক্রান্ত আলোচনা এক বছর থমকে ছিল। অবশেষে আর্জেন্টিনাসহ জোটের অন্যান্য সদস্য দেশ ইইউ’র সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করতে সম্মত হয়। তবে কৃষিবাজারে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রতিযোগিতা বিরাজমান থাকায় ইইউ ও মারকোসুরের বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, ইইউ’র কৃষিবাজারে বিদ্যমান সংরক্ষণবাদ দূর করতে কাজ করতে হবে। তবে মারকোসুরের কৃষিবাজার থেকে সংরক্ষণবাদ দূর করতে ততটা কাজ করতে হবে না বলে মনে করেন তারা।