Print Date & Time : 1 August 2025 Friday 10:54 pm

২৫২ ভ্যাট সার্কেল নেয়া হচ্ছে রিটার্ন, নেই অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছুটির দিনেও খোলা দেশের ২৫২টি ভ্যাট সার্কেল। শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি মেনেই খোলা রাখা হয়েছে। নেওয়া হচ্ছে এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন ও রাজস্ব। আগত করদাতাদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দেওয়া হচ্ছে সেবা। জনসমাগম করতে দেওয়া হচ্ছে না।

প্রতিটি ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার ও কর্মকর্তারা তদারকি করছে। কোথাও কোথাও কমিশনাররা সার্কেল পরিদর্শন করছেন। এনবিআর থেকে সেবা সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে নির্দেশনা। এখন পর্যন্ত কোন সার্কেলে কোন প্রকার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ভ্যাট দক্ষিণ কমিশনার তাসমিনা হোসেন লুনা শেয়ার বিজকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে জাতির এই দূর্যোগকালে আমরা রাজস্ব যোদ্ধা। আজ রিটার্ন দাখিলের শেষদিনে সার্কেলসমূহ পরিদর্শন করেছি। আলহাদুলিল্লাহ, এই দূর্যোগকালেও ভ্যাট প্রদানকারীরা ঝুঁকি নিয়ে ভ্যাট পরিশোধ করছেন। তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’ তিনি ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট টীমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তাদের নির্ভীক প্রয়াসে আমরা আশার চাইেতেও বেশি রাজস্ব অর্জন করতে পেরেছি।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার পাবেল কবীর বলেন, এনবিআরের আদেশের প্রেক্ষিতে সব সার্কেল খোলা রাখা হয়েছে। কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক স্যার বিকাল তিনটায় চান্দগাঁও, চট্টলা ও রাঙামাটি বিভাগীয় দপ্তর ও সার্কেলসমূহ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি চান্দগাঁও বিভাগীয় দপ্তরে সংক্ষিপ্ত রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় তিনি করোনা পরিস্থিতিতে এনবিআরের বিভিন্ন আদেশ যথাযথ পরিপালন করতে বলেন। পাশাপাশি জরুরী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে করদাতাদের যথাযথ সেবা প্রদান ও রাজস্ব আহরণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

কয়েকজন বিভাগীয় কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, নির্দেশনা মেনে অফিস খোলা রাখা হয়েছে। করদাতাদের অফিসে প্রবেশমুখে হাত ধোঁয়া, স্যানিটাইজার ও স্প্রে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনসমাগম করতে দেওয়া হচ্ছে না। কর্মকর্তারা মাস্ক, হ্যান্ড গ্লভস পরিধান করেছেন। কিছু কিছু জায়গায় কর্মকর্তারা পিপিই পরিধান করে সেবা দিচ্ছেন। বেশি ভালো রিটার্ন দাখিল হচ্ছে। তবে কর্মকর্তারা করোনা ঝুঁকি নিয়েই সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান একাধিক কর্মকর্তা।

এনবিআর সদস্য (মূস্ক বাস্তবায়ন ও আইটি) মো. জামাল হোসেন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘সব সার্কেল খোলা রয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। করদাতারা ভালোভাবে রিটার্ন দাখিল করছেন। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমি কমিশনার, বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সার্কেলে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি, সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি, নির্দেশনা দিয়েছি। ভালো রিটার্ন দাখিল ও রাজস্ব আদায় হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সর্তকর্তার সাথে সেবা দিতেও নির্দেশনা দিয়েছি। চারটা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা। তবে করদাতা থাকা পর‌্যন্ত সেবা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

এনবিআর সূত্রমতে, এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে শুক্রবার (১৫ মে) দেশের ২৫২টি ভ্যাট সার্কেল অফিস খোলা রাখা হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত অফিস খোলা থাকবে। তবে যতক্ষণ পর‌্যন্ত করদাতা আসবে ততক্ষণ রিটার্ন জমা নেওয়া হবে।

এর আগে রোববার (১০ মে) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নির্দেশনা প্রদান করে। এনবিআর সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) মো. জামাল হোসেন সই করা অফিস আদেশ জারি করা হয়। আদেশে ’১৫ মে শুক্রবার করদাতাদের ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে ভ্যাট সার্কেলসমূহ খোলা রাখার’ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রচলিত ভ্যাট আইন অনুযায়ী করদাতাদের এপ্রিলের ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ই মে রাত ১২টা পর্যন্ত। সে লক্ষ্যে এনবিআর আগামী ১৫ মে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন বিধায় ভ্যাট রির্টান দাখিলের সুবিধার্থে ভ্যাট সার্কেলসমূহ জুমার নামাজের বিরতি রেখে বিকাল ৪টা (প্রয়োজনে বেশি সময়ও খোলা রাখা যাবে) পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

সে অনুযায়ী সার্কেল অফিসসমূহ খোলা রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। অফিস খোলা রাখার সময়ে করদাতাদের করোনা সংক্রান্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তামূলক সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনারদের এ বিষয়টি মনিটরিং করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন অনুযায়ী, প্রতিমাসের ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। করদাতাদের জরিমানা এড়াতে ও আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় শুক্রবার ছুটির দিনেও ভ্যাট অফিস খোলা রাখা হয়েছে।

###