ফারুক আলম, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের পর নতুন চমক মিনি মেশিনে তেল ভাঙানো। এ উপজেলায় বিগত ১০ বছর থেকে কোনো সরিষার তেলের মেশিন নেই। ঘানিও কমেছে একের পর এক। বোতলজাত আর খোলাময়লা সরিষার তেলই ভরসা। এমন সময় এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন উপজেলার কুমড়িরহাট এলাকার সাইফুল ইসলাম। মাত্র ২৭ হাজার টাকা খরচ করে বনে গেছেন উদ্যোক্তা।
সাইফুল ইসলামের গো-খাদ্যের দোকানের টেবিলে রেখেছেন ২ ফিট আকৃতির মেশিন। অল্প অল্প সরিষা দিচ্ছেন। এক পাশ দিয়ে বের হচ্ছে খৈল। নিচ দিয়ে পড়ছে তেল।
এমন চিত্র দেখতে আর বাড়ি থেকে আনা সরিষার তেল ভাঙাতে ভিড় করছেন দূর-দূরান্তের মানুষ। ভাঙিয়ে নিচ্ছেন, তিল তিসি, বাদাম, সরিষা, সূর্যমুখীসহ যাবতীয় তেলজাত শস্য।
গ্রাহকরা বলছেন, বড় কোনো মিলে গেলে ১৫ কেজির নিচে তেল ভাঙে না। অনেক সময় সরিষার নিজেদের কাছে রেখে দিয়ে আগের ভাঙানো তেল দেয়। এতে বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। আর এখানে যতটুকু ইচ্ছা সরিষা নিয়ে এসে ভাঙিয়ে নেয়া যায়।
উদ্যোগতা সাইফুল ইসলাম জানান, তিন মাস আগে ঢাকা থেকে ২৭ হাজার টাকায় একটি মেশিন কিনে আনেন। মিনি মেশিনটিতে বিদ্যুৎ খরচ খুবই কম। এক কেজি সরিষা থেকে ৪০০ গ্রাম তেল হয়। হাফ কেজি সরিষা আনলেও তিনি ভেঙে দিচ্ছেন। তার দোকানে বাদাম ২৫ টাকা, সূর্যমুখী ৩০ টাকা, কালোজিরা ও সরিষা ২০ টাকা প্রতি কেজি দরে ভাঙিয়ে দিচ্ছেন।
সরিষাসহ এসব শষ্যের খৈল যদি কোনো গ্রাহক না নিয়ে যান, তবে সাইফুলের কাছেই ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। পরে তিনি এগুলো গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার ওমর ফারুক বলেন, ভোজ্যতেলের শস্য চাষ হচ্ছে। এবার আদিতমারীতে ৫৩৫ হেক্টর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, চাষ হয়েছে ৮০০ হেক্টরের বেশি। আমরা একজন কৃষি উদ্যোক্তা পেয়েছি, যে ২৭ হাজার টাকায় একটি মেশিন কিনেছেন। এ রকম মিনি মেশিন দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি হলে এতে কৃষক ক্রেতারা খাঁটি তেল পাবেন।