প্রতিনিধি, দিনাজপুর: দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়েছে। অন্তত ১০৯ মেট্রিক টন আলু আমদানি করা হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন আলু আমদানি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ ডলারে। প্রতি কেজিতে দাম ২৫ টাকা। সব খরচসহ ৩০ টাকা কেজিতে এই আলু বিক্রি সম্ভব বলে মনে করছেন আমদানিকারকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এসব আলু নিয়ে চারটি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ভারত থেকে প্রায় আড়াই হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। ভারত ও বাংলাদেশে ট্রান্সপোর্টেশন চার্জ, ডিউটি চার্জসহ সব চার্জ পরিশোধের পর এক কেজি আলুর দাম পড়বে প্রায় ৩০ থেকে ৩২ টাকা।
আমদানিকারকদের প্রতিনিধি মাহবুব আলম বলেন, ‘দেশের বাজারে আলুর দামে ঊর্ধ্বগতি, তাই সরকার আলু আমদানির অনুমতি দেয়ায় আমরা ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু করেছি। ভারতের গঙ্গারাম থেকে এগুলো আমদানি করা হয়েছে।’ আমদানি করা আলু বাজারে এলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম কমবে বলে জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক গ্রæপ সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের আমদানিকারকরা ভারত থেকে আলু আমদানির জন্য আমদানি অনুমতি (আইপি) চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন গত মঙ্গলবার। এর মধ্যে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টন আলু আমদানির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ১৪ আমদানিকারককে আইপি দেয়া হয়। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার প্রথম চালান এলো।
হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক গ্রæপের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় আলু আমদানি শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাজারে আমদানি করা আলু উঠলে দাম কিছুটা কমবে।
দিনাজপুর শহরের রেলবাজার হাটের খুচরা বিক্রেতা টিয়া রায় জানান, তিনি স্টিক আলু (কার্ডিনাল) প্রতি কেজি ৪৪ টাকা এবং স্থানীয় জাতের (পাটনা) প্রতি কেজি ৫৮ টাকায় বিক্রি করছেন। রংপুরের বিভিন্ন বাজারে একই রকম দাম পাওয়া গেছে।
দেশে আলুর দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বুধবার দিনাজপুরে স্থানীয় প্রশাসন মজুতবিরোধী অভিযান শুরু করে। এদিন বেলা ১১টায় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) সাথী দাস এ অভিযান পরিচালনা করেন।
জেলা বিপণন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের মতে, দিনাজপুরে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে ১০ জন আলু ব্যবসায়ীকে স্থানীয় হিমাগারে মোট ৪৯৪ বস্তা আলু মজুত করতে দেখা যায়। এই আলু স্থানীয় বাজারে ছেড়ে দেয়া হয়, যা আলুর দাম স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে জয়পুরহাটে গতকাল আলু ব্যবসায়ী ও কোল্ডস্টোরেজ অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। জেলায় ১৯টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। নীতিগতভাবে ব্যবসায়ীরা সরকারি দরে আলু বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন।