চলতি অর্থবছরের দুই দিন

৩,৫৩৭ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের ব্যাংকঋণ ঊর্ধ্বমুখী। প্রথম দুই দিনেই ব্যাংক থেকে নিট তিন হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। দুই দিনের পুরো ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংক জোগান দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের যে উৎস থেকে রাজস্ব বাড়ানো উচিত, সেখান থেকে আয় না হওয়ায় কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চলছে সরকার। এখন সরকারের ঋণ পুরোপুরি ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রতি অর্থবছরে ঘাটতি বাজেট পূরণে ব্যাংক ঋণ বাড়াচ্ছে। সরকারের যেসব খাতে আয় বাড়ানো দরকার, তা বাড়ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে গত অর্থবছরের মতো সরকারের ঋণ নেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষে সরকারের ব্যাংকঋণের স্থিতি ছিল তিন লাখ ৯৭ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। আর গত ৪ জুলাই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৮৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম দুই দিনে সরকারের নিট ব্যাংকঋণ দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম দুই দিনে ঋণের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ১৬ কোটি টাকা।

সরকার দুই দিনে ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে, তার পুরোটা বাংলাদেশ ব্যাংক জোগান দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ জুন শেষে সরকারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ স্থিতি ছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। আর আর গত ৪ জুলাই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ২৩১ কোটি টাকা। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দুই দিনে নিয়েছে তিন হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। এ সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকে পরিশোধ করা হয়েছে ১৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকে সরকারের ঋণ স্থিতি দুই লাখ ৩৯ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। গত জুন শেষে ছিল দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা।

চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছর ঘাটতি বাজেট মেটাতে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকার ব্যাংকঋণ নেবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।

 গত অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক লাখ ছয় হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ বেড়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। তবে গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায় সরকারের ব্যাংকঋণ। গত অর্থবছর ব্যাংক থেকে সরকারের ব্যাংক থেকে নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।