নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন গতকাল চার লাখ কোটির মাইলফলক পার করল। আর ২৬ পয়েন্ট বাড়লে ডিএসইএক্স সূচকও ছয় হাজার পয়েন্টের ঘরে প্রবেশ করবে। গতকাল বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট বাড়লেও লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে। বাজার মূলধন ও প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর রেকর্ড অব্যাহত ছিল। গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। শুরুতে বিক্রির চাপ বেশি থাকলেও শেষ ঘণ্টায় কেনার চাপ বাড়লে সূচক বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত এই বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব কয়টি সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। এদিনও সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই, সিএসই ৫০ ও বাজার মূলধন নতুন উচ্চতায় ওঠার রেকর্ড গড়ে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন চার লাখ ৬৬৯ কোটি ৪৭ লাখ ৯৬ হাজার ২০৫ টাকা হয়, যা সর্বোচ্চ বাজার মূলধন এবং একটি মাইলফলক পেরোনোর রেকর্ড। এদিন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৫ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৯৭৩ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এটি সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক তিন দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩১৯ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে আর ডিএস ৩০ সূচক এক দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য সাত শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ১২৬ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৮০৪ কোটি ১৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯২৪ কোটি ৯৫ লাখ ১৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ১২০ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এদিন ২৫ কোটি ছয় লাখ ৩৩ হাজার ৮৮১টি শেয়ার এক লাখ ২৫ হাজার ২৭২ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২টির। কমেছে ১৩৬টির, অপরিবর্তিত ছিল ৫১টির দর।
টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয় লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের। ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় ৭৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯২টি শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর এক টাকা ৭০ পয়সা বেড়েছে। এরপরের অবস্থানগুলোয় ছিল এবি ব্যাংক, আইএফআইসি, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক, বিবিএস, বিবিএস কেব্ল্স, ফরচুন সুজ, আরএকে সিরামিক, আলহাজ টেক্স, এক্সিম ব্যাংক। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শেয়ার লেনদেন হয় এবি ব্যাংকের। কোম্পানিটির এক কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ৪৭০টি শেয়ার ৩১ কোটি ৯ লাখ টাকায় লেনদেন হয়। এরপরের অবস্থানগুলোতে ছিল আইএফআইসি, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, এনবিএল, সিঅ্যান্ডএ টেক্স, এনসিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, শাহ্জালাল ব্যাংক।
ছয় দশমিক ৪৫ শতাংশ দর বেড়েছে সিএমসি কামালের। পাঁচ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে এনসিসি ব্যাংকের। এরপরে পাঁচ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ বাড়ে এবি ব্যাংকের। বিডি অটোকার চার দশমিক ১৯ শতাংশ ও যমুনা ব্যাংক বেড়েছে চার দশমিক ১০ শতাংশ। অন্যদিকে সাত দশমিক ২৪ শতাংশ দর কমেছে ফার্স্ট ফিন্যান্সের। মুন্নু সিরামিক ছয় দশমিক ৮১ শতাংশ, দুলামিয়া কটন পাঁচ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মেঘনা পেট চার দশমিক ১৯ শতাংশ ও এইচআর টেক্স চার দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে, সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭২ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৫৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এটিও সূচকটির সর্বোচ্চ অবস্থান। গতকাল দিনজুড়ে ২৫১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১১৯টির দর বেড়েছে। কমেছে ১০৯টির। অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির দর।
এদিন ৬৩ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৯ কোটি ৯২ লাখ ৩৬ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৪৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। সিএসইতেও লেনদেনের শীর্ষে ছিল প্রাইম ব্যাংক। কোম্পানিটির আট কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর আইডিএলসি ছয় কোটি ৭৭ লাখ টাকার, বিবিএস কেব্ল্স তিন কোটি ৭০ লাখ, এবি ব্যাংক তিন কোটি ৩১ লাখ, আরএকে সিরামিক দুই কোটি ২৪ লাখ, শাহ্জালাল ব্যাংক দুই কোটি ১৪ লাখ, এক্সিম ব্যাংক এক কোটি ৮২ লাখ, আইএফআইসি ব্যাংকের এক কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।