Print Date & Time : 28 August 2025 Thursday 1:25 am

৬ মাসের ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর) : মেহেরপুর সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামে খন্দকারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জরাজীর্ণ টিনের ছাপড়ায় প্রচণ্ড গরম আর বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করতে হচ্ছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পিইডিপি- ফোর প্রকল্পের আওতায় মেহেরপুর সদর উপজেলার খন্দকার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ২৩  লাখ ৬৬ হাজার টাকা। টেন্ডারে এ ভবন নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স আখিল ট্রেডার্স। ২০২০ সালের মাঝা মাঝিতে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ৬ মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করার কথা। কাজের তাগিদ দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হুমকি-ধমকি শুনতে হয় বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের।  

তিনটি সেমিপাকা টিনের ঘরে প্রচণ্ড তাপদাহ সহ্য করে ও  বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের বই খাতাসহ বিদ্যালয়ের প্রযোজনীয় কাগজপত্র ও শিক্ষা উপকরণ ভিজে নষ্ট হচ্ছে।  এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দাবি অল্প দিনে কাজ শেষ হবে। স্থানীয় এলাকাবাসী বিদ্যালয় ভবনটি দ্রুত শেষ করা দাবি জানিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের ছাউনির টিনে ছোট ছোট ছিদ্র। রোদের সময় রোদ ও প্রচণ্ড তাপদাহ আর বর্ষার সময় পানি পড়ে। মেঝে স্যাঁতসেঁতে। এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। দেখা গেছে পোকা মাকড় ও ব্যাঙের বিচরণ। শিক্ষার্থীরা জানান,  বিদ্যুৎ চলে গেলে গরমে ক্লাসে থাকা  যায় না। বর্ষায় টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে বই খাতা ভিজে যায়। ঘরে সাপ পোকা মাকড় উঠে আমাদের খুব ভয় লাগে।

সহকারী শিক্ষক সামসুন নাহার জানান,  মাথার ওপর টিনের চাল। চালের টিনও ব্যবহার অযোগ্য। ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড গরমে কষ্টে ক্লাস করতে হচ্ছে। প্রায় সময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ক্লাস নিতে বাধাগ্রস্ত হতে হচ্ছে আমাদের। বৃষ্টির সময় ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করাতে হয়। শিক্ষার্থীদের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। রোদে বৃষ্টিতে ভিজে অনেক শিক্ষাথী অসুস্থ হয়ে পড়ে।

প্রধান শিক্ষক এহতেশামুল হক বলেন, স্কুল বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে ২০২০ সালে। ৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। এখন ২০২৩ সালও শেষের দিকে এসেও কাজ শেষ হয়নি। বার বার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে  বিষয়টি জানিয়েও কোনো সুরাহা পাননি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আখিল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ফারুক হোসেন বলেন, রডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ইচ্ছা করে কাজ বন্ধ রেখেছি।

মেহেরপুর সদর উপজেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহিন আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। দ্রুত বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।