নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) ২০২২-২০৩৫ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে ঢাকার ভূমির মালিকরা দাবি করেছেন, ঢাকার নতুন ড্যাপে শহরের ২০ শতাংশ এলাকায় সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করা গেলেও অবশিষ্ট ৮০ শতাংশ এলাকায় তার অর্ধেক উচ্চতা ও আয়তনের ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে। এর ফলে ঢাকায় ৮০ শতাংশ মানুষ গত দুই বছরে কোনো নকশা অনুমোদন করতে পারছে না।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ করে এ বৈষম্যমূলক ড্যাপের সংশোধন চান তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকার ভূমি মালিক সমিতির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. দেওয়ান এমএ সাজ্জাদের সভাপতিত্বে আয়োজিত মানববন্ধনে কয়েকশ ভূমি মালিক অংশ নেন।
ড. দেওয়ান এমএ সাজ্জাদ বলেন, ‘আমরা এই ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। বিগত সরকারের আমলে রাজউকের অসৎ ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আমাদের মতো প্লট মালিকদের ক্ষতি করতে এবং বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে ড্যাপ প্রণয়ন করা হয়। আমরা অচিরেই এই বৈষম্যমূলক ড্যাপ সংশোধন চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাজউককে বারবার বলে আসছি, কিন্তু তারা কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ রাখব, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখে করা ড্যাপ সংশোধন করে আমাদের ভবন তৈরিতে সহযোগিতা করুন।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ ও বৈষম্যমূলক ফারের (এফএআর) কারণে ঢাকা শহরের আবাসন উন্নয়ন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।’
ভূমি মালিকরা জানান, ঢাকার দুই লক্ষাধিকের ওপরে ভূমির মালিক ভয়ংকর ক্ষতির মুখে পড়েছি। এই বৈষম্যমূলক ড্যাপের কারণে দ্রুত বাড়ছে ফ্ল্যাটের দাম এবং বাড়িভাড়া। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ‘ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসারে ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ঢাকার ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিক সমিতির নেতারা। তারা বলেন, এই শহরের প্রকৃত ভূমি মালিকরা ভবন নির্মাণ করতে পারছেন না। নতুন করে কোনো ভবন নির্মাণ করতে গেলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। একই পরিমাণ জমিতে আগে যেখানে ১০ তলা ভবন হতো, ফার ইস্যুতে এখন সেখানে পাঁচতলা ভবন পাওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যাপক ক্ষতি ও চরম বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছি। এতে ঢাকা শহরের প্রকৃত ভূমি মালিকদের এই শহরের বাইরে বের করে দেয়ার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করা হয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ ও বৈষম্যমূলক ফারের (এফএআর) সংশোধন চান ভূমি মালিকরা। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা।
এ সময় তারা তাদের পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলোÑঢাকায় ২০০৮ সালের বিধিমালা মোতাবেক ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদান করা; ঢাকা শহরের জলাশয়, খালবিল, নদীনালা, রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, পার্ক, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কৃষি, আবাসিক স্থান প্রভৃতি সংরক্ষণের জন্য ড্যাপ সংশোধন করা; ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রাজউক থেকে ভবন নির্মাণ অনুমোদন সহজীকরণসহ যাবতীয় হয়রানি বন্ধ করা।