নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের গত আট মাসে সারাদেশে ৫৭৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৪ জন। একই সময়ের মধ্যে ২ হাজার ৩০১ জন কন্যাশিশুর বাল্যবিয়ে হয়েছে। গড় হিসাবে প্রতি মাসে ২৮৮ জনের বাল্যবিয়ে হয়েছে। এই আট মাসে ৫৮৯টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাসিমা আক্তার জলি এসব তথ্য তুলে ধরেন। ‘জানুয়ারি-আগস্ট ২০২২: কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন’ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনটি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৪টি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা এবং ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেমের অভিনয় ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৪৯ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের পর ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ৪৩ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) কন্যাশিশু এবং ৮৭ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ৭৬ জন। গত আট মাসে ১৮৬ জন কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ১৮১ কন্যাশিশু।
এছাড়া ১৩৬ কন্যাশিশু আট মাসে পাচার হয়েছে। যাদের মধ্যে ৭৪ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৩ জন। যৌতুক প্রদান করতে না পারায় পাঁচজন কন্যাশিশু আত্মহত্যা করে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সুপারিশ করেন, কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধে শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার সব ঘটনা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে; সর্বস্তরের জন্য ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করতে হবে; সাইবার নিরাপত্তায় নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করাসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।