নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ও (ডা. মুরাদ হাসান) আমাকে নির্যাতন করছে। আমাকে মেরে ফেলবে বলেছে। প্লিজ আমাকে বাঁচান। ও আমাকে মেরে ফেলবে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে এভাবেই জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে নিজের জীবন বাঁচানোর আকুতি জানান সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান।
পরে পুলিশের হাতে উদ্ধার হয়ে ধানমন্ডি থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, আজ বিকেলে ৯৯৯ এ ফোন করেন মুরাদের স্ত্রী। ফোন ধরেন একজন কনস্টেবল সমমর্যাদার অপারেটর। মুরাদের স্ত্রী তাকে বলেন, ‘আমি ডা. জাহানারা। ধানমন্ডি থেকে বলছি। আমার স্বামী ডা. মুরাদ, এমপি মুরাদ।’
এপাশ থেকে ‘আপনাকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি’ জানতে চাইলে মুরাদের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী কয়েকদিন ধরেই আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন। কথায় কথায় আমাকে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার আমি। আমাকে বাঁচান। ও বলেছে আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে ও আমার সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। আমার ওপর এখন হাত তুলতে চেয়েছিল। আমাকে আপনারা বাঁচান। আমাকে উদ্ধার করুন। প্লিজ পুলিশ পাঠান, এখনি পুলিশ পাঠান।’
৯৯৯ এর অপারেটর তখন মুরাদের স্ত্রীর কাছে তার বাসার ঠিকানা চান। তখন ঠিকানা দিলে ৯৯৯ থেকে ধানমন্ডি থানার ডিউটি অফিসারকে ফোন করা হয়। ডিউটি অফিসার তখন মুরাদের ধানমন্ডি ২৮ (পুরাতন) নম্বরের বাসায় পুলিশ পাঠায়। এরপর সন্ধ্যায় থানায় আসেন মুরাদের স্ত্রী। সেখানে জিডি করেন তিনি।
জিডিতে ডা. জাহানারা উল্লেখ করেন, ‘বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি ১৯ বছর। বিবাহিত জীবনে আমাদের সংসারে এক মেয়ে রামিসা ফারিহা রাজকন্যা (১৬) এবং এক ছেলে হাসান আবরার মাহির যুবরাজ (১১)। বিবাদী আমার স্বামী। তিনি বর্তমান সরকারের সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কারণে-অকারণে আমাকে ও সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন। আজ ৬ জানুয়ারি, সময় অনুমান ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগের মতো আমাকে ও আমার সন্তানদের গালিগালাজ করে এবং মারধর করার জন্য উদ্যত হলে আমি ৯৯৯-এ কল করি। পরে ধানমন্ডি থানা পুলিশ বাসার ঠিকানায় পৌঁছালে বিবাদী বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিবাদী আমাকে এবং আমার সন্তানদের যে কোনো সময় ক্ষতি করতে পারে।’