প্রতিনিধি, গাংনী (মেহেরপুর) : মেহেরপুরের গাংনীতে ৩০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে শতাধিক বাড়িঘর। এ সময় ছোট ছোট দোকানঘরের চাল এবং গাছপালা ভেঙে পড়ে ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সকাল ৯টা পর্যন্ত এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। ঝড়ে ধানক্ষেত ও কলাক্ষেত নষ্ট হয়।

জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত চলে এই ঝড়। এ সময় অনেক ঘরের চাল উড়ে গেছে, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে গাছপালার। পৌর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার দিকে আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব। ৩০ মিনিটজুড়ে চলে ঝড়। এ সময় বজ্রাঘাত ও বৃষ্টিপাত হয়। ঝড়ে পৌর এলাকার গাছপালা, টিনের বসতঘর, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। আম ও লিচুর কয়েকটি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টিন ও মাটির বেশিরভাগ ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে। অনেকের টিনের চাল উড়ে যায়। এতে শহরের বিভিন্ন সড়কে গাছ উপড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো শহর।

শহরের ওয়াপদা মোড়ের চায়ের দোকানি শফি উল্লাহ বলেন, সন্ধ্যায় হঠাৎ করে শুরু হওয়া ঝড়ে আমার দোকানের টিনের চাল উড়ে যায়। এমন ঝড় গত ১০ বছরেও দেখিনি। ঝড়ের সঙ্গে বজ্রপাত ও বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। অনেক গাছপালা সড়কের ওপর ভেঙে পড়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়ের সময় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের একটি দোকানে কিছু মানুষ আশ্রয় নেয়। ঝড়ে দোকানটি ভেঙে পড়লে সেখানে থাকা ১০ জন এবং কলাক্ষেত ও মাঠে কাজ করার সময় আরও ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ঝড়ের তাণ্ডবে আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন বাগান মালিক। জেলা সদরের আম ব্যবসায়ী হাসান মণ্ডল বলেন, ঝড়ে আমার তিনটি আম বাগানের তিন ভাগ আম ঝরে গেছে। এতে বাগান কেনার টাকা তুলতে পারব কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এমন ঝড় আগে কখনও দেখিনি।

যুগিরগোফার কলাচাষি বাক্কা জানান, তার পাঁচ বিঘা কলাক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। গাছগুলো সব ভেঙে গেছে। মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান হবে। ধানচাষি বোরহান জানান, তার ১১ বিঘাসহ অন্তত ২০ বিঘা জমির ধানক্ষেত মাটিয়ে শুয়ে পড়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে অনেক ফসল।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার এমরান হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে সন্ধ্যায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে উপসহকারী কৃষি অফিসাররা নিজ নিজ এলাকায় কাজ করছেন।