নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনজীবী আদালতে না আসায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে এ নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উঠে যাচ্ছে এবং ভোট আয়োজনে আইনগত কোনো বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। গতকাল বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল খারিজের এ আদেশ দেন।
এ ধরনের আদেশে রিটকারী পক্ষ আবারও রুল শুনানির আবেদন করতে পারে। তবে রিটকারীরা এ মামলা চালাতে আর আগ্রহী নন বলে জানিয়েছেন তাদের অন্যতম আইনজীবী আহসান হাবিব ভূঁইয়া। আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন রেখে তফসিল দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
ওই তফসিলের বৈধতা চ্যালঞ্জ করে এবং তফসিলের কার্যকারিতার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। তাদের আবেদনের ওপর শুনানি করে গত বছর ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়। ওই নির্বাচনের তফসিল কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করা হয়।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল বিভাগে গেলে সেখানে হাইকোর্টের দেওয়া রুল দ্রুত নিষ্পত্তির আদেশ আসে। পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি রুল শুনানির জন্য বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে ওঠে। কিন্তু রিটকারী বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কেউ আদালতে না থাকায় আদালত রুল খারিজ করে দেয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষে আদালতে উপস্থিত আইনজীবী কাজী মাইনুল হাসান পরে বলেন, নির্বাচন হতে আইনগত কোনো বাধা এখন নেই। তবে বাদীপক্ষ চাইলে রুলটি আবার পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করতে পারে। আর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আফিফা বেগম বলেন, রিটকারীদের আইনজীবী ছিলেন না। আদালত তাই রুল খারিজ করে দিয়েছে। তবে বাদীপক্ষ চাইলে আবার রুল শুনানির সুযোগ আছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূঁইয়া বলেন, তার মক্কেল আর আগ্রহী নন। রিটকারী আর মামলাটি পরিচালনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেননি। সে কারণে আমরা আর এগুইনি। রিটকারীর অনাগ্রহের কারণেই আদালত ডিসচার্জ অব ডিফেন্স (ডিডি) অর্ডার দিয়েছে। ফলে নির্বাচন পরিচালনার জন্য আর কোনো বাধা থাকছে না।
এদিকে আগামী মার্চ মাসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বসতে হবে। আমরা তাড়াতাড়ি এ নির্বাচন করে ফেলব।’
গতকাল নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে এমন ইঙ্গিত দেন সিইসি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘মার্চে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদের মাঝেই এ নির্বাচন করা হবে। তবে এ বিষয়ে কমিশনে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখানে পুনঃতফসিল করা হবে। বসতে হবে সবার সঙ্গে। নির্বাচন তাড়াতাড়ি করে ফেলব। উপজেলা নির্বাচন এর ওপর প্রভাব ফেলবে না। এর মাঝেই করে ফেলব।’
