ক্লাসে শিক্ষক নেই, শিক্ষার্থীরা বাইরে : দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের কয়েকটি বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে অধিকাংশ শিক্ষকের অনুপস্থিতি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের গরহাজিরের অভিযোগ পেয়ে গতকাল দুদক চেয়ারম্যান নিজেই তিনটি প্রতিষ্ঠানে যান বলে জানিয়েছেন কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।

‘বিশেষ মাধ্যমে’ খবর পেয়ে ইকবাল মাহমুদ চট্টগ্রাম সফর করেন বলে জানিয়ে প্রণব বলেন,  ‘চেয়ারম্যান সকাল সোয়া ৯টায় হাজির হন নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি সেখানে গিয়ে স্কুল চলার সময়ে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের স্কুলের বাইরে দেখে বিস্মিত হন। এরপর তিনি স্কুলে ঢোকেন। সেখানে দেখেন আট শিক্ষকের মধ্যে একমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত, বাকি সাত শিক্ষকই অনুপস্থিত।’

প্রণব বলেন, ওই শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের আশপাশে আচার-চানাচুর খেয়ে অলস সময় পার করতে দেখেছেন চেয়ারম্যান। সে সময় অভিভাবকরা দুদক চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অভিভাবকদের বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ডবিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে। তারপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতিসাধন করবেন বা করার চেষ্টা করবেন, এমন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’

এরপর দুদক চেয়ারম্যান নগরীর ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। এ বিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষকের মধ্যে দুজন অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়ে প্রণব বলেন, ‘তাদের অনুপস্থিতির কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষ দুদক চেয়ারম্যানকে জানাতে পারেনি। দুদক চেয়ারম্যান ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির সিট পরীক্ষা করে দেখেন, গতকাল যেসব শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল, তাদের অনেককেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের রোলকল করা হয়নি।’

এরপর দুদক চেয়ারম্যান যান নগরীর শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার তথ্য জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন ইকবাল মাহমুদ।

তবে নবম শ্রেণিতে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করা ছাত্রছাত্রীদের দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে উন্নীত করায় দুদক চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে প্রণব কুমার জানান।

চট্টগ্রাম মহানগর ও সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে দুদক চেয়ারম্যান মিরসরাই উপজেলার খাজুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।

প্রণব কুমার বলেন, গ্রামের এই প্রতিষ্ঠানে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের শতভাগ উপস্থিতি দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া বিদ্যালয়টির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ দেখে সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করেন ইকবাল মাহমুদ।