জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালিদ হোসেন

শোবিজ ডেস্ক: শিল্পী, গবেষক, স্বরলিপিকার ও নজরুল সংগীতগুরু খালিদ হোসেনের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ৪ মে ভর্তি করানো হয়েছে। সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুল মোমেনের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। বিষয়টি তার ছেলে আসিফ হোসেন জানিয়েছেন। আগের তুলনায় বাবার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। চিনতে পারছেন না স্বজনদের। চিকিৎসকরা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলেছে। এখন সবকিছু মহান আল্লাহর ওপরই নির্ভর করছে। বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন ছেলে আসিফ। তিনি আরও বলেন বাবা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। ইদানীং কিডনির জটিলতা, ফুসফুসে সমস্যা এবং এছাড়া বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসেই হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু ৪ মে শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে হয়। এখন তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ৯ নম্বর কেবিনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে খালিদ হোসেনের চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। স্ত্রী শাহানা হোসেন বলেন, প্রতি মাসে শুধু একটি ওষুধের জন্যই ব্যয় হয় এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারকে। ইতোমধ্যে সরকারি যে সহয়তা দিয়েছিল তা শেষ হয়ে গেছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা।
তার গাওয়া নজরুল সংগীতের ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এর পাশাপাশি একটি আধুনিক গানের অ্যালবাম ও ইসলামী গানের ১২টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ২০০০ সালে একুশে পদক পেয়েছেন। এছাড়া পেয়েছেন নজরুল একাডেমি পদক, শিল্পকলা একাডেমি পদক, কলকাতা থেকে চুরুলিয়া পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ডে সংগীতের প্রশিক্ষক ও নিরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এখন নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুল সংগীতের আদি সুরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য।
প্রসঙ্গত, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে ১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর খালিদ হোসেনের জš§। দেশ বিভাগের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে তিনি চলে আসেন কুষ্টিয়ার কোর্টপাড়ায়। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে নজরুল সংগীতের শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত আছেন। দেশ-বিদেশে তার অসংখ্য ছাত্রছাত্রী রয়েছে।