নিজস্ব প্রতিবেদক:উন্নয়নবিষয়ক প্রধান রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) আইন পরিবর্তন করা হয়েছে। গত বুধবার আইনটি সংশোধনের বিষয়ে একটি বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়। আইন পরিবর্তনের ফলে এখন থেকে উন্নয়ন বিষয়ে বহুমুখী গবেষণার পাশাপাশি উচ্চতর ডিগ্রি দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি থেকে উন্নয়ন অর্থনীতি, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা এ তিন বিষয়ে ডিগ্রি দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন। গতকাল তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, বিআইডিএস একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। এটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে গবেষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রাখা প্রয়োজন। কিন্তু সব সময় গবেষক পাওয়া যায় না। তাই এখন থেকে বিআইডিএস নিজেই গবেষক তৈরি করবে। তবে এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির ডিগ্রি প্রদান কার্যক্রম কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করতে হবে। এ জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আহ্বান জানানো হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বিআইডিএস থেকে ওই তিনটি বিষয়ে ডিগ্রি দেওয়া হবে।
পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে ১৯৭৪ সালে নামকরণ করা হয় বিআইডিএস। সে সময় সংসদে একটি আইন পাস হয়। আইন অনুযায়ী এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আইন পরিবর্তনের ফলে প্রতিষ্ঠানটির স্বায়ত্তশাসন খর্ব হবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আইনে ব্যাপক কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। আগে আইনটি ছিল ইংরেজি ভাষায়। এখন সেটি ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে। আর আগে এটির পরিচালনা পর্ষদ ছিল ১৪ সদস্যবিশিষ্ট। এখন তা হবে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট। নতুন করে পর্ষদ সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য। পাশাপাশি ডিগ্রি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
কোন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বিআইডিএস মহাপরিচালক কেএএস মুরশিদ বলেন, আগামী অর্থবছর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে। এরই মধ্যে কারিকুলাম প্রস্তুত অনেকখানি এগিয়েছে। তবে কোন কোন ডিসিপ্লিনে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুতের আগে এসব বিষয় নির্ধারণ করা হবে।
এর আগে গত বুধবার সংসদে বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হলে কয়েকজন সদস্য তাদের বক্তব্যে বলেন, নতুন আইন পাস হলে বিআইডিএসের স্বকীয়তা খর্ব হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, তেমন কিছু হবে না। কারণ নতুন আইনে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কাঠামোয় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
নতুন আইন পাসের মাধ্যমে ১৯৭৪ সালে প্রণীত ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাক্ট’ রহিত হলো। আর নতুন আইনটি বাংলাদেশে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইন-২০১৭ নামে অভিহিত হবে।