ক্রীড়া ডেস্ক: বৃষ্টির কারণে গেল বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে পারেনি। অনেকেই তাই আফসোস করেছিল একটা জয় হাতছাড়ার। গত পরশু অবশ্য সেই আক্ষেপ পূরণের সুযোগ এসেছিল টাইগারদের। কিন্তু লঙ্কানদের ঘরের মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বোলিং-ফিল্ডিং ব্যর্থতায় ৯১ রানে হেরে বসে লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা। এর ফলে সিরিজ হারের শঙ্কায়ও পড়েছেন মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। তবে আজই ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে টিম টাইগার্স। এ জন্য প্রস্তুতও তারা। এমনটাই জানিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।
গত পরশু বাজে ফিল্ডিংয়ের সঙ্গে বোলিং-ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতায় শ্রীলঙ্কার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। কুশল পেরেরার সেঞ্চুরির পর বল হাতে লাসিথ মালিঙ্গা ও নুয়ান প্রদীপের তোপে বড় হারের লজ্জায় পড়ে তামিম ইকবালের দল। তাতে টাইগারদের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও ধাক্কা লেগেছে। যদিও অন্তর্বর্তী কোচ সুজন আশা হারাচ্ছেন না, আজই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় তার কণ্ঠে, ‘ম্যাচ হারলে কখনোই ভালো লাগে না। তারপরও আমাদের সুযোগ আছে। যদি আমরা আজকের ম্যাচে ভালো করতে পারি, তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। আমি মনে করি আমাদের সঙ্গে আছে। আমার বিশ্বাস আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’
মাশরাফি বিন মুর্তজার চোটে লঙ্কা সফরে টাইগারদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তামিম ইকবাল। কিন্তু গত পরশু তার এ দায়িত্বের শুরুতেই লেগেছে ধাক্কা। আবার নিজেও পারেনি ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে। তবে এ বাঁহাতি আজ নেতৃত্বের সঙ্গে ২২ গজেও জ্বলে উঠবেন। এমনটাই আশা করেন তিনি, ‘আমি কিছুটা ধুঁকছি অবশ্যই। আর আমি যখন অধিনায়ক, ভালো পারফর্ম করা শুরু করা উচিত। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। পাঁচজনের যে দলটি আমার আছে, তাদের নিয়ে আমি খুশি। ওদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। ওদের সঙ্গে আছে, স্রেফ দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। ভালো ব্যাপার হলো, এখনও দুটি ম্যাচ আছে, আমরা লড়াইয়ে আছি।’
প্রথম ম্যাচে হারলেও এখনই সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হলেও অসম্ভব মনে করছেন না সুজন, ‘প্রথম ম্যাচ হারের পর কাজটা কঠিন। কিন্তু যদি আমরা (দ্বিতীয় ম্যাচ) জিতি, তাহলে বিষয়টি অন্যরকম হবে। পরের ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীলঙ্কা কঠিন প্রতিপক্ষ, তবে তাদের হারানো যাবে না, তাও না।’
একাদশে পরিবর্তন নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। তবে ব্যাপারটি নিয়ে এখনও ভাবেননি সুজন, ‘আমরা সেরা একাদশটা বাছাই করেছি। আমি মনে করি, এ ছেলেরাই আরও ভালো করতে পারে। পরিবর্তনের কথাটা আমরা এখনও চিন্তা করিনি। সবসময় পরিবর্তন যে ভালো হয় তা নয়, আবার ভালোও হয়। প্রথম ম্যাচে আমরা এটাকেই সেরা দল হিসেবে ভেবেছি এবং এ দলে বিশ্বাস রাখতে চাই।’
শ্রীলঙ্কার মাটিতে এখনও পর্যন্ত সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে হেরে এবারও সেটা ধূসর হয়ে গেছে। তবে সুজন এখনও আশা হারাচ্ছেন না। তিনি চেয়ে রয়েছেন আজকের ম্যাচের দিকে, ‘আগে তো আজকের ম্যাচটা জিতি, তারপর বলব। প্রথম ম্যাচ হেরেছি বলে সর্বশেষ হয়নি, কালকের ম্যাচটা যদি জিততে পারি, তাহলে আমাদের সুযোগ থাকছেই। শ্রীলঙ্কার মাটি সবসময়ই কঠিন, তবে এমন কঠিন না যে, তা অতিক্রম করা যাবে না। বাংলাদেশের এ দলটারই সেই সক্ষমতা আছে অতিক্রম করার।’
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের বড় পরীক্ষায় ফেলেছিলেন লাসিথ মালিঙ্গা। আজ অবশ্য তাকে আর মোকাবিলা করতে হবে না। কেননা এ ডানহাতি ওয়ানডের জার্সি একবারে তুলে রেখেছেন। যে কারণে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে টাইগার শিবিরে।
গত বিশ্বকাপ থেকেই বাংলাদেশকে বেশি ভোগাচ্ছে বাজে বোলিং-ফিল্ডিং। আজ এ দুই জায়গায় সতীর্থদের কাছ থেকে উন্নতি চাইছেন তামিম ইকবাল। অন্যদিকে টপ ও লোয়ার মিডেল অর্ডারের কাছ থেকে এ বাঁহাতি বেশি বেশি রান চাইছেন। যদি এসব জায়গায় নিজেদের সেরাটা দিতে পারেন সৌম্য সরকার-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা তবে না জেতার কোনো কারণ থাকবে না টাইগারদের।