প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া চা বাগানে মাতৃমৃত্যু হ্রাস করা সম্ভব নয়। সরকারের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এসব সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করা সম্ভব বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে। এজন্য জেলা পর্যায়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড) আয়োজিত ডেসেমিনেশন সেমিনারে এসব কথা বলেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক।
তিনি আরও বলেন, চা বাগানের মায়েদের সুস্বাস্থ্যের জন্য বেসরকারি পর্যায়ের যেসব প্রকল্প আছে, সেগুলোকে সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। বাগান পর্যায়ে সিআইপিআরবি’র যেসব বাগান সেবিকা আছে তাদের একটি নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ডের মধ্যে এনে সেবার কাজ পরিচালনা করতে হবে। তাহলেই বাগান পর্যায়ে মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পথ সহজ হবে।
সিআইপিআরবি’র পরিচালক একেএম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারের শুরুতেই সেডের পরিচালক ফিলিপ গাইন চা বাগান এবং অন্যদের ব্যবহারের জন্য যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকারবিষয়ক প্রকাশনা ও প্রামাণ্যচিত্র সম্পর্কে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, চা বাগানের মানুষ নানা বৈষম্যের শিকার। বৈষম্যের শিকার মানুষকে সেবা দিয়েও সুফল পাওয়া যায় না। চা বাগানে মজুরি বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিকারের বিষয়ে সরকার, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে তাদের সমস্যা খুঁজে বের করে তার সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন বিনেন্দু ভৌমিক, ইউএনএফপিএ’র যৌন ও প্রজনন বিভাগের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট মো. সামসুজ্জামান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ স¤পাদক এবং কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাম ভজন কৈরী, শ্রীমঙ্গল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী প্রমুখ।
সেড ছয় মাসব্যাপী গবেষণা শেষে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকারবিষয়ক ম্যানুয়াল, ফ্লাইয়ার এবং পোস্টার প্রকাশ করে এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে। এসব তৈরিতে সেড’কে সহায়তা করেছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)।
অনুষ্ঠানের সভাপতি সিআইপিআরবি’র পরিচালক একেএম ফজলুর রহমান বলেন, সেড, সিআইপিআরবি এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল, বাগান মায়েদের সুরক্ষার জন্য একসঙ্গে কাজ করছে। এই তিন প্রতিষ্ঠান মূলত কাজ করছে সরকারের সঙ্গে। তাদের এই উদ্যোগকে সফল করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
