বিদেশে লোক পাঠানোর প্রতারণায় সাতজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি ওয়ার্ক পারমিট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দেখিয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অর্থ আত্মসাৎকারী প্রতারকচক্রের সাত সদস্যকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির খিলক্ষেত থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন মো. বাপ্পী ইসলাম (৪৩); মো. নিয়াজুল ইসলাম (৫৪); এনএ সাত্তার (৫৮); মো. সাব্বির হাসান (২৪); মো. রাসেল হাওলাদার (২৪); মো. সোহরাব হোসেন সৌরভ (৩৮) ও মো. মোহাইমিনুল ইসলাম (৩৫)।
এ সময় তাদের নিকট হতে পাঁচটি জাল/ভুয়া ইউএসএ আইডি কার্ড, বিভিন্ন লোকের নামে বাংলাদেশি পাসপোর্টের প্রথম পাতার ফটোকপি ৪৮ পাতা, বিদেশে কাজ ও হিসাবের খাতা একটি, সিঙ্গাপুর এলারলাইনস ৪৪৭ আই থাই এয়ারওয়েজ লি. এর বিমানের টিকিটের ফটোকপি দুটি, অত্র মামলার বাদীসহ অন্য দুজনের এনএএফএ মেডিক্যাল সেন্টারের মেডিক্যাল রিপোর্ট তিন পাতা, টকতে জরুরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পত্র দুই পাতা, বাংলাদেশ জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন লোকের নামে বিভিন্ন দেশের টেনিং ২৫টি সার্টিফিকেট, ইউএসএ এম্বাসি লেবার কার্ড পাঁচটি। কোরিয়া ২৪টি লেবার কার্ড, কানাডার ১২টি লেবার কার্ড; পোলেন্ডের ৯টি লেবার কার্ড; গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রামে ইউএসএ এম্বাসি; সাউথ কোরিয়া এম্বাসির বিভিন্ন দেশের নামে ইমারজেন্সি নোটিস সাত পাতা, বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মূল ও ফটোকপি-সাতটি (যাহা ভিন্ন ভিন্ন লোকের নামে), কম্পিউটার সিপিইউ দুটি ও প্রিন্টার-দুটিসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র উদ্ধার করেন।
খিলক্ষেত থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট মো. সোহেল মিয়া (৩৪), থানায় এসে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন যে, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র কানাডায় পাঠানোর কথা বলে অর্থের বিনিময়ে তাকে জাল কানাডিয়া ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করে এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন তারিখে তার কাছ থেকে নগদ চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সোহেল মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে খিলক্ষেত থানায় ২৮ আগস্ট একটি মামলা রুজু করা হয়। খিলক্ষেত থানার ওসির নেতৃত্বে খিলক্ষেত থানাধীন রাজউক ট্রেড সেন্টারের সামনে থেকে মো. বাপ্পী ইসলাম ও মো. নিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাদের সহযোগীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তাদের দেওয়া তথ্যমতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা হতে অন্য পাঁচ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত বাপ্পী প্রতারকচক্রের প্রধান হিসেবে কাজ করে। নিয়াজুল বিদেশে লোক পাঠানো বিভিন্ন এজেন্সির সামনে অবস্থান করে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে কানাডা, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিবে বলে প্রলোভন দেয়। সেই সঙ্গে বলতে থাকে আমার বস (বাপ্পী) আমেরিকান এমবাসিতে চাকরি করে, সে বিভিন্ন দেশে সহজে লোক পাঠাতে পারে। নিয়াজুলের প্রলোভনে কেউ রাজি হলে বিদেশে পাঠানোর নামে তাদের এক একজনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকারও অধিক নেয় তারা। তারা জালিয়াতি করে বিভিন্ন আইডি কার্ড, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, বিভিন্ন দেশের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ও মেডিক্যাল রিপোর্টসহ জাল কাগজপত্র তৈরি করে থাকে। এ জন্য তারা বিদেশগামীদের কাছ থেকে বারতি টাকা আদায় করে।