রাজবাড়ীর মহাদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ বিলীন

প্রতিনিধি, রাজবাড়ী: পদ্মা নদীর ভাঙনে রাজবাড়ী সদরের মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ বিলীন হয়েছে। বিদ্যালয়টি রক্ষায় তিন বছরে ব্যয় হয়েছে কোটি টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পাকা টিনসেড ভবনের পশ্চিম দিকের একটি কক্ষ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাশে একটি বাল্কহেডে বস্তায় করে বালি ভরাট করা হচ্ছে। ভরাট করার পর বস্তাগুলো নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেদাতুল ইসলাম জানান, বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ১৪৯ শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন। এক সময় কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকলেও গত কয়েক বছরে পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে নদী বিদ্যালয়ের কাছে চলে এসেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে স্কুলভবনের একাংশ পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ফলে অপর একটি ভবনে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। এতে পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। সবাই বিদ্যালয়টি খোলা স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কেননা আগামী মাসে শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর দুটি প্যাকেজের বিপরীতে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পাড় প্রতিরক্ষার কাজ করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এবং তার আগের বছর আরও ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে কোনো সমস্যা হয়নি। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর বিকালে ভাঙন শুরু হয়। খবর পেয়ে সেদিনই জরুরি ভিত্তিতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ (বস্তা) ফেলার কাজ শুরু করা হয়। ভাঙনকবলিত ১২০ মিটার এলাকার ৬০ মিটার অংশকে জরুরি ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে ২৫০ কেজি ওজনের বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। মোট ছয় হাজার ৩০০টি জিও ব্যাগ ফেলতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।
কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী কৃষ্ণেন্দু বিকাশ সরকার জানান, এ স্কুলটি গত বছরও ভাঙনের কবলে পড়েছিল। তখন ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার জন্য তিন মিটার গাইডওয়াল দেওয়া হয়েছিল। এ বছর আবারও স্কুলটি নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। ভাঙন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বালির বস্তা ফেলা শুরু করেছেন। স্কুলটি রক্ষা করতে ২ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ১৩ হাজার বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। প্রতিটি বালির বস্তা সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫৫ টাকা, ৬০ লাখ টাকার বস্তা ফেলা হয়েছে। গত বছরও ৬০ লাখ টাকার কাজ করা হয় এ স্কুল রক্ষার্থে।