নিজস্ব প্রতিবেদক: নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে ব্যাংকগুলোকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে একটি নীতিমালা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে কর্র্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাটি অন্যতম। কিন্তু অনেক ব্যাংকই তা পারছে না। এজন্য ব্যাংকগুলোকে ফের সতর্ক হতে হুঁশিয়ারি দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
ঈদ উপলক্ষে ব্যাংকে গ্রাহক ভীড় বাড়ছে। এজন্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে কঠোর হওয়ার জন্য বলা হয়। আজ ১৮ মে (সোমবার) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নির্দেশনাটি অনুসরণ করতে বলা হয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় ১৩টি নির্দেশনা পরিপালন করতে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে একটি চিঠি দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সব ব্যাংককে তা জানিয়ে দিতে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশের প্রত্যেকটি জেলায় এখন কভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তি আছেন। কোথাও সংক্রমণের হার কম। কোথাও স্থিতবস্থায় আছে। আমাদের সকলের লক্ষ্য থাকা উচিত দ্রততম সময়ে সংক্রমণের হার হ্রাস করা।
লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ধীরে ধীরে সচল করার উদ্যোগ হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে খুলে দেওয়া হয়েছে। ঈদুল ফিতর আসন্ন বিধায় ব্যাংকগুলোতে জনসমাগম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তাই ব্যাংকগুলোকে ১৩টি নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করা হলো: ব্যাংক খোলার আগে মহামারি প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন-মাস্ক, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে। আপদকালীন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আপদকালীন সংক্রমিত বস্তুর ডিসপোজাল এলাকায স্থাপন করতে হবে। সব ইউনিটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণকে জোরদার করতে হবে। কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক ব্যবস্থা নথিভুক্ত এবং যারা অসুস্থ অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যাংকের প্রবেশমুখে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র স্থাপন বা তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং শুধুমাত্র স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পূর্ণ ব্যক্তিদের ঢুকতে দিতে হবে। বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করতে হবে। সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এয়ারকন্ডিশনারের স্বাভাবিক ক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। বিশুদ্ধ বাতাস বৃদ্ধি এবং এয়ারসিস্টেমের ফিরে আসা বাতাসকে বন্ধ রাখতে হবে।
সর্বসাধারণের ব্যবহার্য সুবিধাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে (যেমন কিউইং মেশিন, কাউন্টার, চিফার মেশিন, রোলার পেন, ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, জনসাধারণের বসার জায়গা ইত্যাদি) হবে।
জনসাধারণের চলাচলের এলাকা যেমন ব্যাংকিং লবি, এলিভেটর এবং তথ্য কেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ময়লা সময় মত পরিষ্কার করতে হবে। এটিএমে প্রবেশ করার লাইনে দাঁড়ানোর বা ব্যবহারের সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য লাইনে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে।
ব্যবসায়ীক কাজে ব্যাংকের আসা মানুষের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিদিনের ব্যবসায়ীক কাজের জন্য ই-ব্যাংকিং অথবা এটিএম ব্যবহারের পরামর্শ দিতে হবে। কাউন্টার জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা এবং সকলকে হাত পরিষ্কারের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।
স্টাফদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে। হাতের হাইজিনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢাকতে হবে।
ব্যাংকে আগত সকলকে মাস্ক পরতে হবে। পোস্টার ইলেকট্রনিক্স স্ক্রিন এবং বুলেটিন বোর্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করতে হবে।
যদি নিশ্চিত কভি-১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে এবং একই সাথে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশন সিস্টেমকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মূল্যায়ন হওয়ার আগে পুনরায় চালু করা উচিত হবে না।
মাঝারি ও উচ্চ ঝঁকিপূর্ণ এলাকায় ব্যাংকগুলোকে তাদের বিজনেস আওয়ার সংক্ষিপ্ত করতে এবং আগত লোকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।##