প্রতিনিধি, রাজশাহী: দেশব্যাপী চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনের আদলে বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন গতকাল রাজশাহী শহরের বেশিরভাগ দোকান খোলা রয়েছে। নগরী ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মার্কেটে দোকানগুলো খুলে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলার ১১০ ব্যবসায়ী সংগঠনের জোট রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান বলেন, গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তবে দোকান খোলা রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের জানানো হয়নি। সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করে তা জানানো হবে। তাই আমরা দোকান খোলোর বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিইনি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের যারা নিরুপায় হয়ে গেছেন, তারাই মূলত দোকান খুলেছেন।
লকডাউন উপেক্ষা করে দোকান খুলেছেন রাজশাহীর সবচেয়ে বড় বিপণিবিতান আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। সকাল ১০টা থেকে ধীরে ধীরে দোকান খোলেন মালিকরা। মালিকদের দাবি, বাধ্য হয়েই তারা দোকান খুলেছেন। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, সরকারের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনোভাবে দোকান খোলা রাখা যাবে না।
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট সময় ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে। না হয় আমরা কীভাবে চলব? আমাদের কর্মচারীদের বেতন, দোকান ভাড়া কীভাবে দেব?
রফিকুল ইসলাম রবি নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা গত এক বছর ধরে ক্ষতির মধ্যে রয়েছি। গত ঈদে দোকান বন্ধ থাকায় যা ক্ষতি হয়েছে সেটি থেকে এখনও বের হতে পারিনি। সামনে ঈদ, এই সময়ে ব্যবসা করতে না দিলে ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে যাবে।
আহমেদুল হক মামুন নামে এক গার্মেন্ট ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের লাখ টাকার পণ্য আটকে রয়েছে। পণ্য বিক্রি করতে না দিলে কীভাবে ব্যবসা চলবে? গার্মেন্ট ব্যবসা ঈদের মৌসুমে বেশি হয়। সরকার দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় দোকান খুলতে দিক, আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিশ্চিত করে পণ্য বিক্রি করব।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু আসলাম বলেন, দোকান খোলা রাখার কথা না। আমাদের ভিজিল্যান্স টিমগুলো তা দেখবেন। পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা দেখবেন। দোকান তেমন খোলা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিরারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, আমরা কাউকে (দোকান খুলতে) মানা করছি না। অল্পসংখ্যক দোকান খোলা আছে। দোকানদাররা বলছেন, তারা দোকান পরিষ্কার করার জন্য খুলেছেন। হিসাব করার জন্য বসেছেন। তারা অল্প সময় পর দোকান বন্ধ করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন।