ঘরে বসে কাজ করায় উৎপাদনশীলতা বাড়ে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গত বছর বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯-এর প্রকোপ শুরু হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজ করার সুযোগ দেয়। এখনও বিশ্বের অনেক দেশে কর্মীরা ঘরে বসে কাজ করেন। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরে বসে কাজ করার এ এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ হাজারের বেশি কর্মীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। খবর: ব্ল–মবার্গ, সিএনএন।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরে বসে কাজ করার এ এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে, অফিসে যাতায়াতের জন্য যে সময় নষ্ট হয়, সেটি এখন আর হচ্ছে না। মহামারির সময়ে দ্রুত নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করা হলে অর্থনীতিতে আরও উন্নয়ন ঘটবে বলে পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।

ইনস্টিটিউটো টেকনোলজিকো অটোনমো ডি মেক্সিকোর জোস মারিয়া বারেরো, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির নিকোলাস ব্লুম ও ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর স্টিভেন জে ডেভিস এ গবেষণাকাজে নেতৃত্ব দেন।

তবে এটাও ঠিক যে সবাই বাড়িতে বসে কাজ করার পক্ষপাতী নন। গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড সলোমন নতুন এ পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘বিপথগামিতা’। তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব তার প্রতিষ্ঠান এ পদ্ধতি থেকে সরে আসবে। নতুন যারা কাজে যোগ দিচ্ছেন, তাদের জন্য এটি সমস্যাদায়ক। কারণ তারা তো কাজের সংস্কৃতি, বিশেষ করে ওয়াল স্ট্রিটের সংস্কৃতির সঙ্গেই পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না।

বিপরীতমুখী কথা বলছেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ। তিনি বলেন, ফেসবুকের মূল ভবনের বাইরে বসে বহুদূর থেকে প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়ার কারণে অনেক নতুন প্রতিভা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। অনেক কর্মী মহামারির পরও অফিস থেকে দূরে বসে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিয়েছে, মহামারি শেষ হলেও তারা কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ দেবে। অনেক প্রতিষ্ঠান তো তাদের অফিসের পরিসরও কমিয়ে ফেলেছে। এইচএসবিসি হোল্ডিংস লন্ডনে তাদের সদর দপ্তরের জায়গা কমিয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অফিসকক্ষগুলোকে গ্রাহকের সঙ্গে মিটিং করার কক্ষে পরিণত করা হয়েছে।

গবেষণায় বলা হচ্ছে, মূলত উচ্চ বেতনের ও উচ্চশিক্ষিত কর্মীরা যে কাজগুলো করেন, সেগুলোই বাড়িতে বসে বা অফিস থেকে দূরে বসে করা সম্ভব। গবেষকরা বলছেন, তাদের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, কাজের জায়গার ক্ষেত্রে এ শিথিলতার কারণে করোনা মহামারি-পরবর্তী সময়ে উৎপাদনশীলতা বাড়বে অন্তত পাঁচ শতাংশ।