শেয়ার বিজ ডেস্ক: দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন হওয়ায় সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল রোববার সচিবালয়ে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিডিনিউজ।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার এবং সম্পাদক ফোরামের নেতারা বৈঠকে বিভিন্ন দাবি জানান।
সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতায় পড়তে না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে তারা তথ্যমন্ত্রীর সহায়তা চান।
সাংবাদিকদের এসব সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য শোনার পর তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রোজিনার জামিন হওয়ায় আমিও সন্তোষ প্রকাশ করছি। কারণ রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের কোনো বিরোধিতা করেনি। অর্থাৎ রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে তার জামিন হোক।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, জামিন হওয়ার পর সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আপনাদের মনের ক্ষোভ এরই মধ্যে প্রকাশ করেছেন। আপনারা আবার আগের মতো কাজে ফেরত যাবেন, কাজকর্ম করবেন, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সবাইকে আইন মানতে হবে। আমি মন্ত্রী নিজে যদি কোনো অফিসে যাই, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের অফিসে গিয়ে আমি যদি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের অনুমতি ছাড়া তাদের কোনো গোপনীয় নথি থেকে কোনো কাজগপত্র নিই, নিশ্চয়ই সেটি বেআইনি, সেটি অপরাধ। সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।’
কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম থেকেই বিষয়টিকে সেভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি। নিরপেক্ষ তদন্ত যেন হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকব। রোজিনার সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করা হলে সেটিও তদন্তে আসবে।’
বৈঠকে রোজিনা ইসলামের জামিন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারাও। বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী পেশাগত দায়িত্ব পালনের বাইরেও নিজ কর্মক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধান থাকলে এমন ঝামেলা হবে না বলে মত দেন তিনি।
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, রোজিনা ইস্যু শেষ হওয়ার পরও সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাজ করতে হবে। সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কোনো সাংবাদিককে যেন হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন না থাকায় অনেককে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া শিগগির চূড়ান্ত করা হবে। এ আইন পাস হলে সব সাংবাদিক সুরক্ষা পাবেন।
তিনি বলেন, পত্রিকার ভৌতিক প্রচারসংখ্যা ডিএফপিতে আছে, সেটি সংশোধনের কাজ চলছে। আসল প্রচারসংখ্যা কত, সেটি তদন্ত করে বের করেছি, এখানে শৃঙ্খলা আনতে কাজ করছি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি ফেসবুক পেজ থেকে রোজিনাকে নিয়ে কিছু খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়ে এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বৈঠকে। মন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন বলে সাংবাদিকদের আশ্বাস দেন।