নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের অনুমতি ছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্প করা ভাসানচরে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভা শেষে কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে মানসম্মতভাবে তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে, পাঁচ হাজার টাকা করে ভাতা দিতে হবে। পৃথিবীর কোনো দেশেই শরণার্থীদের নাগরিক সুবিধা থাকে না। তাদের থাকতে দেয়া হয়, নিরাপত্তা দেয়া হয়। আমরা বলেছি তাদের চিকিৎসার যেন কোনো ঘাটতি না হয়। তাদের থাকা, খাওয়া, পরার যা দরকার তা শতভাগ সরকার নিশ্চিত করবে। পকেট খরচ দেয়ার কোনো বিধান নেই। হয়ত না বুঝে বা কারও প্ররোচনায় বলেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচর বিচ্ছিন্ন এলাকা। কিন্তু সেখানে প্রতিদিনই বহুসংখ্যাক নৌযান যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। এসব বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো নাগরিকই বিনা অনুমতিতে সেখানে যেতে পারবে না। যাতায়াতের যেসব বাহন আছে, সেগুলো বন্ধ থাকবে। সাংবাদিক বা অন্য কেউ সেখানে যেতে চাইলে সরকারের অনুমোদন নিয়ে যাবেন। কক্সবাজার বা অন্য এলাকায় যারা রয়েছে তারা মাদক ব্যবসা ও অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত। সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য চারদিকে ওয়াল নির্মাণের কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে। সিসি ক্যামেরা বাড়ানো হবে। অবৈধ কর্মকাণ্ড যাতে বন্ধ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
রোহিঙ্গারা দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব দিয়েছি। এরা যৌথভাবে বিষয়টি দেখবেন। যদি কাউকে পাওয়া যায় তাকে ধরে ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হবে। সেখান থেকে তাদের ভাসানচরে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’
মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি বলেন, ‘গুগল ও অ্যামাজন ভ্যাটের আওতায় এসেছে। রেজিস্ট্রেশন করেছে। অন্য যারা করেনি তারাও রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসুক আমরা এটা চাই। অনেকেই ভালো কাজ করছেন কিন্তু কেউ কেউ মিথ্যাচার করে সেটা স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য হুমকিস্বরূপ। রেজিস্ট্রেশন থাকলে ইউটিউব, ফেসবুকের রেজিস্ট্রেশন থাকলে আমরা ধরতে পারব। এখন কে কোথা থেকে করে পাওয়া যায় না। তখন যিনি অপরাধ করবেন তিনি জবাবদিহির আওতায় আসবেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা বিজ্ঞাপন দেয় কীভাবে টাকা পরিশোধ হয় সেটা বৈধ পথে যায় কিনা, এসব তথ্য জানাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গুগলের অফিস বাংলাদেশে না থাকায় অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। বাংলাদেশে অফিস করার অনুরোধ করেছি। যদি অফিস না করে বিকল্প কী করা যায় সেটা ভাবা হবে। আমরা চাই সবাই আইনের মধ্যে থাকুক।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিরাময় কেন্দ্রে মোটিভেশনের থেকে বেশি অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ আছে। পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিষয়গুলো দেখতে। কতগুলো নিরাময়কেন্দ্র আছে সেখানে চিকিৎসক কতজন আছে, কীভাবে চিকিৎসা দেয়া হয় সেসব জানাতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এলএসডি, আইস-মাদকের সঙ্গে ১৫টি গ্রুপকে পুলিশ শনাক্ত করেছে। দুটিকে আইনের আওতায় এনেছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিট পুলিশিং করতে প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে একটি করে রুম দেয়া হবে যাতে তারা সেখানে বসতে পারে, টহল বাড়াতে পারে। একই সঙ্গে আমরা চামড়ার ব্যাপারে আলোচনা করেছি, সামনে ঈদ। আমাদের ট্যানারিগুলো এখনও শিফট হয়নি। আমরা শিল্পমন্ত্রীকে বলেছি, দাম নির্ধারণ করে তিন দিন আগে না, অনেক আগে থেকেই এটা প্রচার করার জন্য। যতটুকু সম্ভব এখান থেকে সাভারে শিফট করার জন্য। এগুলো যাতে পাচার না হতে পারে সেজন্য বর্ডারকে আরও সক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য বলা হয়েছে।’
