বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে কারা ছিল এক দিন বের হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৫ আগস্টে নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উম্মোচন প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতির জনকের হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আশা করি, জাতির

জনকের হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে সবসময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্রের যে কোনো অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

জাতির জনককে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্দ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামাকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত করা।

তিনি বলেন, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে। অতীতের জঞ্জাল সরিয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এই পাঁচ বছরে দেশে আর্থসামাজিক উন্নয়নের এক নবদিগন্তের সূচনা হয়। আমরা জাতির জনকের হত্যার বিচার শুরু করি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আবার এই হত্যার বিচারকাজ বন্ধ করে দেয়।

জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ হয়েছে।

টানা তিন মেয়াদে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১২ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হয়েছে। আমরা জাতির জনকের জš§শতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি। এই সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রাণঘাতী কভিডের মহামারির মধ্যেও আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৫ আগস্টের শহীদদের কথা স্মরণ করেন এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।