নিজস্ব প্রতিবেদক: রেমিট্যান্স প্রণোদনার সুযোগ নিতে টাকা বিদেশে পাচারের যে সন্দেহ করা হচ্ছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সিপিডির এই ধরনের সন্দেহের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো সঠিক প্রস্তাব বলে আমার মনে হচ্ছে না। আমার মনে হয়, এ ধরনের কথাবার্তা ঠিক নয়।’
অন্য কোনো টাকা রেমিট্যান্সের নামে দেশে ঢুকছে কি না, তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ করেছিল গবেষণা সংস্থা সিপিডি।
বাংলাদেশের বিদেশি অর্থ উপার্জনের বড় খাত প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। এই অর্থ বৈধভাবে পাঠানো উৎসাহিত করতে সরকার দুই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। অর্থাৎ প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে সরকার আরও দুই টাকা যোগ হয়ে মোট ১০২ টাকা দিচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ বলেন প্রণোদনা পাওয়ার জন্য দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে আবার নিয়ে আসা হয়। আমি বারবার একটা কথা বোঝাবার চেষ্টা করেছি, দেশে তো বহু খাত আছে, যাদের আমরা ইনসেনটিভ দিয়ে থাকি। মাছ, সবজিতে আমরা ইনসেনটিভ দিই, তাহলে শুধু রেমিট্যান্স খাতকে তারা টার্গেট করবে কেন?
সন্দেহ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘যে পরিমাণ জনবল আমাদের বিদেশে আছে, সেই অনুপাতে টাকা আসছে কি না, সেটা দেখতে হবে। এর চেয়ে বেশি এলে তখন বুঝতে হবে যে, এখানে অন্য কিছু হচ্ছে।’
দেশের রিজার্ভের বড় জোগানদাতা রেমিট্যান্স গত দুই মাসে কমে গেছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ বলছেন, মহামারির সময়ে বৈধভাবে আসত বলে তা বেড়েছিল, এখন হুন্ডিসহ অন্য মাধ্যমে আবার আসছে বলে তা সরকারের হিসাবে আসছে না।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তিন মাসে এক বিলিয়ন ডলারের মতো কম এসেছে। গত বছর ২৫ বিলিয়নের মতো এসেছিল। এখন যে গতিতে এগুচ্ছে তাতে ২২ থেকে ২৩ বিলিয়নের মতো আসবে বলে মনে হচ্ছে।
‘এর মূল কারণ হচ্ছে প্রবাসী ভাইবোনেরা বিভিন্ন দেশে কর্মরত যারা ছিলেন, তারা কভিডের সময় দেশে এসে বিভিন্ন কারণে আবার ফেরত যেতে পারেননি। এখন আবার যাওয়া শুরু করেছেন। ফলে রেমিট্যান্সের বিষয়টি আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে আসবে।’ রেমিট্যান্স কমার পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন মুস্তফা কামাল।