তারুণ্যের মাঝে অঙ্কুরিত করি দেশপ্রেমের বীজ

তারুণ্য মানেই শক্তি, তারুণ্য মানেই বিজয়। তারুণ্য মানেই হার মানা, তারুণ্য মানেই নির্ভীক চিত্ত। এই তারুণ্যের হাত ধরেই এসেছে আমাদের গৌরবগাথা। ডিসেম্বর এলেই আমাদের মনে পড়ে যায় সেই গৌরবান্বিত বিজয়। তবে বর্তমানে এই তরুণ সমাজকে বিভিন্ন অপব্যাখ্যা দিয়ে তাদের ভ্রান্ত পথে চালানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। যার ফলে সমাজে সৃষ্ট হচ্ছে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি কিংবা অনৈতিক কর্মকাণ্ড। তাই বিজয়ের এই মাসে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে দেশপ্রেমে।

আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশ তরুণ। তাদের ওপর নির্ভর করছে এদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়েও ৯০ শতাংশ তরুণ নেতৃত্ব দিয়েছে। কাজেই তরুণদের বাদ দিয়ে দেশকে কল্পনাও করা যায় না। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ এবং লালন করে তরুণদের এদেশের দায়িত্ব নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

আমরা অনাগত উত্তরসূরিদের জন্য রেখে যেতে পারি এক নতুন পৃথিবী। যেমনি করে আমাদের পূর্বপুরুষের স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলা প্রকৃতিতে প্রাণভরে প্রশ্বাস নিতে পারছি, যার প্রতিটি সেকেন্ড একেকটি স্বস্তির উপন্যাস। এখন আমাদের তারুণ্যশক্তির জাগরণ ঘটাতে হলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পেছনেই গল্পের দিকে তাকাতে হবে। সেই গল্পকে যে যত বেশি নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারবে, সে তত বেশি সফলকাম হবে ও দিনশেষে বিজয়ের মুখ দেখবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জানা উচিত। বাঙালি জাতির অস্তিত্বের সঙ্গে এই ইতিহাস জড়িয়ে আছে। আজকের প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুধু ইতিহাসই নয়, এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের জন্য শক্তি, সাহস, প্রেরণা এবং সব বাধার মুখে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার এক মহান মন্ত্র। এদেশের তরুণদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার আগ্রহের কমতি নেই। অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যখন নানা মতভেদ দেখে তখন বিভ্রান্তির শিকার হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রজন্ম যেমন চোখে দেখে সত্যটা জেনেছে। তার পরবর্তী প্রজন্মও অগ্রজের মুখে শুনে শুনে সঠিক ইতিহাসটা কিছুটা হলেও জেনেছে। কিন্তু বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস পৌঁছাতে ক্ষণে ক্ষণে নানাভাবে বিকৃত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সরকারগুলোর মধ্যে অনেকেই নিজেদের স্বার্থানুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনা করেছে। তাই বিজয়ের এই অর্ধশত বছরের প্রাক্কালে চলুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখার। তারুণ্যের মাঝে ছড়িয়ে দিই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং অঙ্কুরিত করি দেশপ্রেমের

বীজ। তবেই তারুণ্যরা আগামীর বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে।

ইমরান হোসাইন

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়