বাড়ছে বস্ত্র খাতের লেনদেন পিছিয়ে ব্যাংক

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে লেনদেন বাড়ছে। গত এক মাসের ব্যবধানে এ খাতের লেনদেন বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। অপরদিকে ব্যাংক খাতের লেনদেন দুই শতাংশ পিছিয়েছে। তথ্য পর্যালোচনাকারী একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, বাজারে মোট লেনদেনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানির। মোট লেনদেনের ২০ শতাংশ ছিল বস্ত্র খাতের, চলতি সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার এ খাতের দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। তার পরেই রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের অবস্থান, আর তৃতীয় অবস্থানে আছে ব্যাংকিং খাত। চলতি সপ্তাহে মোট লেনদেনের মধ্যে ১৩ শতাংশই ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের; এ খাতের দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা, লেনদেনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকিং খাত; লেনদেনে ১২ শতাংশ এ খাতের দখলে ছিল। যার দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। মে মাসের মাঝামাঝিতে অর্থাৎ দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ ছিল বস্ত্র খাতের, তার পরের অবস্থান ব্যাংকিং খাতের, ওই সময় ব্যাংকিং খাতের ১৪ শতাংশ ছিল। তার পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের, যা মোট লেনদেনের ১১ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে লেনদেনের দিক দিয়ে ব্যাংকিং খাত তৃতীয় অবস্থানে নেমে গেছে আর শীর্ষে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত।

এদিকে পিই রেশিও দিক দিয়ে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ৮ দশমিক দুই পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৯ দশমিক নয় পয়েন্টে এবং বস্ত্র খাতের ২৬ দশমিক পাঁচ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এক মাস আগে অর্থাৎ মে মাসের একই সময়ে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ছিল ৮ দশমিক এক পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৯ দশমিক সাত পয়েন্টে এবং বস্ত্র খাতের ২৭ দশমিক পাঁচ পয়েন্টে অবস্থান করেছিল।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পিই রেশিওর দিক দিয়েও ব্যাংক খাতে বিনিয়োগনির্ভর পরিবেশ বিরাজ করছে। তাদের মতে, পিই রেশিও ১৫-এর মধ্যে থাকলে ওই খাতের কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর জুনে হিসাববছর শেষ হবে। সে হিসেবে এসব কোম্পানির লভ্যাংশের মৌসুম আসছে। অপরদিকে ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের মৌসুম শেষ হয়েছে। যখন এ খাতের লভ্যাংশের মৌসুম ছিল, তখন বিভিন্নœ ব্যাংকের শেয়ারের দরে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। আর এতে লেনদেনে শীর্ষ অবস্থায় উঠে এসেছিল ব্যাংকিং খাত। লভ্যাংশের মৌসুম শেষ হওয়ায় এখন এ খাতে বিনিয়োগ কিছুটা কমেছে। তাতে লেনদেনের ওপরও প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন তারা।

তারা বলছেন, মন্দা বাজারে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করছে না, তারা স্বল্প মেয়াদে মুনাফা করার চেষ্টা করছে। আর এ কারণে সামনে যেসব কোম্পানির হিসাববছর শেষ হবে সেগুলোর ঝুঁকছে তারা।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পিই রেশিও অনুযায়ী ব্যাংকি খাতে বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করলেও তাদের তো ডিভিডেন্ড দেওয়া শেষ। তাই এ খাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমছে। তবে সামনে বস্ত্র খাতসহ যেসব খাতের ক্লোজিং তাদের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ায় সেসব খাতের লেনদেন বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের মোট ৪৮টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। জুনে কোম্পানিগুলোর হিসাববছর শেষ হবে। আগের বছর দু’একটি ছাড়া বেশিরভাগ কোম্পানিই বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।