কয়লাবোঝাই জাহাজডুবির দ্বিতীয় দিনেও শুরু হয়নি উদ্ধারকাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে লাইটার জাহাজ ডুবে যাওয়ার দ্বিতীয় দিনেও কয়লা উত্তোলন শুরু করেনি মালিকপক্ষ। যদিও গতকাল সকাল থেকে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ ‘এমভি নাওমী’ থেকে কয়লা উত্তোলনের নির্দেশনা ছিল বন্দর কর্তৃপক্ষের। বৃহস্পতিবার রাতে ৬০০ টন কয়লা নিয়ে পশুর নদীর চার নম্বর বয়ার কাছে ওই জাহাজটি ডুবে যায়, যদিও দুই নিরাপত্তা কর্মীসহ আট নাবিক নিরাপদে তীরে উঠতে সক্ষম হন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, লাইটার জাহাজ এমভি নাওমী বন্দরের পাঁচ নম্বর বয়ায় অবস্থানরত পানামা পতাকাবাহী ‘সিএমভি জর্দান’ বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে কয়লা বোঝাই করে চার নম্বর বয়ার কাছে এসে তলা ফেটে ডুবে যায়। এ ঘটনার পরপরই সেখানে পরিদর্শন করে বয়া স্থাপন করেন তারা। বন্দরের নৌ-চ্যানেল ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জাহাজের মালিকপক্ষ কয়লা উত্তোলন শুরু করতে পারেনি। মালিকপক্ষের সঙ্গে স্যালভেজ টিমের বনিবনা না হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে।’

এদিকে গতকাল থেকে কয়লা উত্তোলন এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লাইটার জাহাজটি উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে সে কাজ এখনও শুরু করেনি মালিকপক্ষ। জাহাজটির মাস্টার মো. আজিজুল হকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার ফোন করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাটের আহ্বায়ক মো. নুর আলম শেখ বলেন, ‘কয়লা একটি বিষাক্ত ময়লা। এই কয়লার জন্য সুন্দরবনের মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। একইসঙ্গে কয়লামিশ্রিত পানি খেয়ে জলজ প্রাণী ও পশুর নদীর খাদ্য শৃঙ্খলার মারাত্মক ক্ষতি হবে।’

দ্রুত এ কয়লা অপসারণের জন্য দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদাসীনতার কারণে বারবার এই নৌ-দুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর পশুর নদীতে কয়লা নিয়ে ডুবে যায় ‘এমভি ফারদিন-১’ নামে একটি লাইটার জাহাজ। তবে জাহাজটি উত্তোলন করা হয়েছে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের।