ভারতে স্টক দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সিইও

শেয়ার বিজ ডেস্ক:পুঁজিবাজারে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত ভারতের ন্যাশনাল স্টক (এনএসআই) এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) চিত্রা রামকৃষ্ণ গ্রেপ্তার হলেন। কয়েক দিন ধরে চিত্রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার কথায় অসংলগ্নতা ধরা পড়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করল দেশটির সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। খবর: হিন্দুস্তান টাইমস।

২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এনএসইর সিইও ছিলেন চিত্রা রামকৃষ্ণ। সে সময় পুঁজিবাজারের নথিপত্র হেরফেরসহ বেশ কয়েকবার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে সিবিআইয়ের নজরদারিতে ছিলেন তিনি। এছাড়া হিমালয় যোগী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তথ্য দেয়া-নেয়ার অভিযোগ করেছিল সিবিআই। গোটা ঘটনায় বারবার উঠে এসেছে অদৃশ্য হিমালয় যোগী বা সাধুর নাম। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকে বলছেন, এই যোগীর সঙ্গে একজোট হয়ে নানা কাজ করেছেন চিত্রা রামকৃষ্ণ। চিত্রার নিজের মতেও তিনি যা করেছেন তা এই অদৃশ্য যোগীর কথা অনুযায়ী করেছেন। যদিও হিমালয় যোগী নামের ওই ব্যক্তি আনন্দ সুব্রহ্মণ্যম এনএসআই’র সাবেক কর্মচারী বলে ধারণা করছে সিবিআই। কয়েক দিন আগে দুর্নীতি মামলার অভিযোগে আনন্দকে গ্রেপ্তারের পর চিত্রার নাম উঠে আসে।

২০১৮ সাল থেকে বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিবিআই। কেন এতদিন লাগল, তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তও তা উসকে দিয়েছে। সঞ্জীব আগরওয়াকের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) এতদিন অভিযুক্তের প্রতি কিছুটা নরম মনোভাব দেখিয়েছে। এখন দেখার বিষয় তাকে গ্রেপ্তার করার পর কীভাবে তদন্ত এগোয়।

উল্লেখ্য, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ভারতের পুঁজিবাজারে আর্থিক দুর্নীতির মামলা হয়। এই দুর্নীতির সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা খুঁজে পেতে নানা তদন্ত করে সিবিআই। তবে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক দুর্নীতির মামলায় চিত্রা জড়িত ছিলেন বলে সেবি অভিযোগ করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণও পায় সিবিআই। তথ্য-প্রমাণে দেখা যায়, স্টক ব্রোকার সঞ্জয় গুপ্তকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারের যাবতীয় সরকারি তথ্য ওপিজি সিকিউরিটিজ লিমিটেডে দিতেন চিত্রা।

পরবর্তীকালে সিবিআইয়ের হাতে একাধিক তথ্য উঠে আসার খবর পেয়ে গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় আগেভাগে আদালতে জামিনের আবেদন করেন চিত্রা। তবে আদালত সেই জামিন খারিজ করে দেন। এরপর তার দিল্লির বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই।

গ্রেপ্তারের পরে চিত্রার দাবি শুনে কিছুটা চমকে ওঠেন সিবিআই কর্মকর্তারা। গ্রেপ্তারের পর একটি ভগবদ্গীতা উপহার চান চিত্রা। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে তাকে মেডিকেল চেক-আপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সিবিআই সদর দপ্তরে রাখা হয় তাকে।