চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস

মিথ্যা ঘোষণায় ৪২ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: ঢাকার বংশালের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এনবি ট্রেডিং হাউস। প্রতিষ্ঠানটি চীন থেকে পাঁচ কনটেইনার কোটেড ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ঘোষণায় চট্টগ্রাম বন্দরে উচ্চ শুল্কের ১২০ টন ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট নিয়ে এসেছে, যার বিপরীতে প্রায় ৪২ লাখ ১৩ হাজার টাকা শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছে। তবে কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের তৎপরতায় শেষ রক্ষা হয়নি আমদানিকারকের। অর্থাৎ মিথ্যা ঘোষণায় মাত্র ছয় লাখ ৮২ হাজার টাকায় পণ্য খালাসের পরিবর্তে জরিমানাসহ এক কোটি ৩০ লাখ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে আমদানিকারককে।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, ঢাকার বংশালের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চীন থেকে পাঁচ কনটেইনার পণ্য আনার পর চালানটি খালাসে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের এমএন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট গত ৩০ মার্চ অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। চালানটি আমদানিতে এলসি ইস্যু করেছে বেসিক ব্যাংক। চালানটি চীন থেকে গত ১৫ মার্চ জাহাজীকরণ হয়েছিল। তবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসার ধরন ও ঠিকানা এবং পণ্যের বর্ণনা বিশ্লেষণ করে এ চালানে অসত্য ঘোষণার প্রাথমিক ধারণা পায়। এরপর এআইআর চালানটি খালাস স্থগিত রাখতে বিল অব এন্ট্রি লক করে। গত ৬ এপ্রিল চালানটি বন্দরের ভেতরে খুলে এআইআর টিম কায়িক পরীক্ষা করে। 

এ বিষয়ে কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার দায়িত্বে থাকা উপ-কমিশনার কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা জানান, ওই চালানে চার হাজার ৮০০ বস্তা শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় দেখা গেছে ব্রাউন কালারের বস্তাগুলোর ওপর আঠা দিয়ে লাগানো সাদা কাগজে প্রিন্ট করে কোটেড ক্যালসিয়াম কার্বোনেট লেখা রয়েছে। কিন্তু বস্তা খোলার পর সাদা পলিথিনের বস্তায় ঘোষিত পণ্যের পরিবর্তে ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট পাওয়া যায়। মোট ১২০ টন ডেক্সট্রোজ পাওয়া গেছে, যার আনুমানিক শুল্কায়নযোগ্য দাম ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এ চালানে ৪২ লাখ ১৩ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯-এর সেকশন ৩২ ভঙ্গ ও সেকশন ১৫৬ (১)-এর টেবিলের ১৪ অনুযায়ী আমদানিকারকের ওপর ৮৮ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। 

এ পণ্যচালানে ঘোষিত বিবরণ অনুযায়ী শুল্ক কর ছিল ছয় লাখ ৮২ হাজার ৭৩৩ টাকা। কায়িক পরীক্ষায় প্রাপ্ত পণ্য অনুযায়ী শুল্ক কর ও জরিমানা বাবদ আদায় করা হবে এক কোটি ৩৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫৯ টাকা।