বরিশালে সড়কে ঝরল ১১ প্রাণ

প্রতিনিধি, বরিশাল: বরিশালে যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নারী ও শিশুসহ ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।  গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান উজিরপুর থানার ওসি আলী আরশাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ১১ জনের মধ্যে ৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

তারা হলেনÑউজিরপুর উপজেলার মুন্ডুপাশা গ্রামের মনোরঞ্জন শীলের ছেলে মাধব শীল (৪৫), ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেয়ড়ী এলাকার মনির হোসেন হাওলাদারের ছেলে আরাফাত হোসেন হাওলাদার (৯), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর ভেচকি এলাকার কুদ্দুস আকনের ছেলে নজরুল ইসলাম আকন (৩৫), একই উপজেলার ভেচকি এলাকার রাকিব আকনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২০), বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরবাদ এলাকার মোবারক আলী বেপারির ছেলে হালিম মিয়া (৩১), ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার সুতারকান্দা এলাকার মৃত আওলাদ আলীর ছেলে সেন্টু মোল্লা (৫০) ও বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাঠি গ্রামের মৃত আবুল কাশেম হাওলাদারের ছেলে রমজান হাওলাদার (৩৮)।

ওসি আরও জানান, বাসটি ঢাকা থেকে ভাণ্ডারিয়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পথে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় বাসের মধ্যে আটকে থাকা মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওসি জানান, মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

হাইওয়ে পুলিশের ওসি শেখ বেলাল হোসেন জানান, বাস থেকে ৯ জন, পাশের ডোবা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

চালক ঘুমিয়ে পড়ায় দুর্ঘটনা: এদিকে উজিরপুরে ১১ জন নিহতের ঘটনায় গাড়ির গতি বেপরোয়া ও চালক ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দুলাল উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এ সময় গাড়ির গতিও ছিল বেপরোয়া। তাছাড়া বাসে যান্ত্রিক ত্রæটিও থাকতে পারে।

নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে সহায়তা: দুর্ঘটনায় নিহতদের দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা ও আহতদের চিকিৎসায় সার্বিক সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান।

তদন্তে ৩ সদস্যর কমিটি: এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তি ১৭ জনের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেখানে সার্বিক তত্বধানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।