আমরা রেফারি মারামারি বন্ধ করতে হবে খেলোয়াড়দের:সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটের মাঠের ‘খেলোয়াড়’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, আমরা সহিংসতা বন্ধ করতে পারব না; আপনাদের (রাজনৈতিক দল) দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ খেলোয়াড় কিন্তু আপনারা। আপনারা মাঠে খেলবেন, আমরা রেফারি। আমাদের অনেক ক্ষমতা আছে। ক্ষমতা কিন্তু কম না, ক্ষমতা প্রয়োগ করব। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সংলাপ শুরুর প্রথম দিন সিইসি এ কথা বলেন। সকালে ব?বি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে এ বৈঠক শুরু হয়।

আগের জাতীয় নির্বাচনে নানা সমালোচনার দায় নতুন ইসি নিতে চায় না জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সব দায় তারা নেবেন। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দায় বর্তমান কমিশনকে দেবেন না। আমাদের নির্বাচনের দায় আমরা বহন করব। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও নিরপেক্ষ করতে। তবে এক্ষেত্রে সব দল সহযোগিতা না করলে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ভোটের মাঠে কেউ শক্তি প্রদর্শন করলে প্রতিরোধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন সিইসি। তার ভাষায়, আপনাদের সমন্বিত প্রয়াস থাকবে, কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকেও কিন্তু রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে। আপনি যদি দৌড় দেন, তাহলে আমি কী করব? কাজেই আমরা সাহায্য করব। পুলিশের ওপর, সরকারের ওপর আমাদের কমান্ড থাকবে।

নির্বাচনের সময় নির্দলীয় সরকারের যে দাবি বিভিন্ন বিরোধী দল করে আসছে, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে রাজনৈতিক দল আর সরকারের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় যেটি থাকবে সেটি কিন্তু সরকার। রাজনৈতিক দল আর সরকার এক নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। কিন্তু যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী; দলের কেউ নন। এ বিভাজনটা সবাইকে বুঝতে হবে।

সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা সরকারের সাহায্য চাইবে। সহায়তা চাইব। সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে নির্বাচনের পরিণতি খুবই মন্দ হতে পারে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ যে গুরুত্বপূর্ণ, সে কথাও সিইসি বলেন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা না থাকলে জনমতের সঠিক প্রতিফলন হয় না বলে মনে করেন সিইসি। তিনি বলেন, পক্ষ-প্রতিপক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে মাঠ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সম্ভাব্য অনিয়ম-কারচুপি, দুর্নীতি, অর্থ শক্তির বৈভব ও পেশিশক্তির প্রয়োগ ও প্রভাব বহুলাংশে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় এনডিএমের সঙ্গে সংলাপে বসে কমিশন। দলটির প্রতিনিধি, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।