বিশ্বজুড়ে ‘বেবি পাউডার’ বিক্রি বন্ধের ঘোষণা জনসনের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্ববাজারে ২০২৩ সালে শিশুদের ট্যালকযুক্ত পাউডার (বেবি পাউডার) বিক্রি বন্ধ করে দেয়ার কথা জানিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন (জেঅ্যান্ডজে)। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি এ ঘোষণা দেয়। নিরাপদ ব্যবহারসংক্রান্ত ভোক্তাদের হাজারো মামলার মুখে দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যটির বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল কোম্পানিটি। খবর: রয়টার্স।

কোম্পানিটি বলেছে, বৈশ্বিকভাবে চাহিদা মূল্যায়নের অংশ হিসেবে তারা কর্নস্টার্চযুক্ত (ভুট্টা থেকে নেয়া উপাদান) সব ধরনের বেবি পাউডার বিক্রি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা আরও বলেছে, কর্নস্টার্চযুক্ত বেবি পাউডার বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশেই এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে জেঅ্যান্ডজে ঘোষণা দেয়, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তারা ট্যালকম বেবি পাউডার বিক্রি বন্ধ করে দেবে। কোম্পানিটির ভাষ্য অনুযায়ী, পণ্যটির নিরাপদ ব্যবহারসংক্রান্ত একের পর এক আইনি চ্যালেঞ্জের কারণে ‘ভুল তথ্য’ ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে চাহিদা কমে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি বেবি ট্যালকম পাউডারে অ্যাসবেস্টসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে, এমন অভিযোগে করা ভোক্তা ও তাদের স্বজনদের প্রায় ৩৮ হাজার মামলা মোকাবিলা করতে হচ্ছে কোম্পানিটিকে।

কার্সিনোজেন নামে পরিচিত উপাদানটি জীবন্ত কোষে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। তবে জেঅ্যান্ডজে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেখিয়ে দিয়েছে, কোম্পানিটির ট্যালক নিরাপদ ও অ্যাসবেস্টসমুক্ত। বৃহস্পতিবার পণ্যটির উৎপাদন চালিয়ে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার সময়ও একই বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করেছে কোম্পানিটি। অক্টোবরে সহযোগী প্রতিষ্ঠান এলটিএল ম্যানেজমেন্ট বন্ধ করে দেয় জেঅ্যান্ডজে। ট্যালক-সম্পর্কিত দাবিগুলোকে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত করে তাৎক্ষণিকভাবে এটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। ফলে মুলতবি মামলাগুলোর কার্যক্রম থমকে যায়।

দেউলিয়া ঘোষণার আগে মামলায় ও আপস-মীমাংসায় কোম্পানিটিকে ৩৫০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ গুনতে হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, কেবল ২২ নারীকেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল।

২০১৮ সালের রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, জেঅ্যান্ডজে জানত, নিজেদের তৈরি বেবি ট্যালক পণ্যে কার্সিনোজেন হিসেবে পরিচিত অ্যাসবেস্টসের উপস্থিতি আছে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে।