‘দ্রুত সময়ে উৎপাদনে আসবে ইন্ট্রাকো এলপিজি সিলিন্ডার’

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রয়োজনে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকায় ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগে কুমিল্লায় এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনের কারখানা কিনে নেয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি গত ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর নতুন কারখানাটি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু মহামারি করোনাসহ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে কারখানা পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন কিছু সহায়ক যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন শেষ হলে দ্রুত সময়ে উৎপাদনে আসবে কারখানাটি।

ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রয়োজনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে দেশের দুই পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয়। এ সময়ে আইপিও’র মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল। আর উত্তোলিত টাকায় এলপিজি প্লান্ট স্থাপনসহ যন্ত্রপাতি ও যানবাহন কেনার প্রক্রিয়া ছিল। পরে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় ইন্ট্রোকো গ্রুপের সহযোগী কোম্পানি ইন্ট্রাকো টিয়ানলং এলপিজি সিলিন্ডার ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডে সাড়ে ৩১ কোটি টাকায় কিনে নেয়। যদিও কোম্পানির বাজারদর ছিল সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২০ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দুই চেকে প্রায় ৩১ কোটি টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু গত দুই বছরের উৎপাদনে আসতে পারেনি। কিন্তু মহামারি করোনা, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর ও ভ্যাট জটিলতার কারণে কারখানা পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশনের পরিচালনা পর্ষদের ৯৯তম বৈঠকে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং কনভার্টিবল বন্ড নামের এ বন্ডের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। পাশাপাশি গুড সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, এম হাই অ্যান্ড কোম্পানি সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, নেসা অ্যান্ড সন্স লিমিটেড, আবসার অ্যান্ড ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ও ইন্ট্রাকো অটোমোবাইলস লিমিটেড নামের পাঁচ সহযোগী প্রতিষ্ঠান একীভূতকরণ করবে। এ জন্য গত ২৭ জুলাইয়ে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়। আগামী ২৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্তের বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয়ার লক্ষ্যে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করেছে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন।

এ বিষয়ে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের কোম্পানি সচিব জিএম সালাউদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, আমাদের ইন্ট্রাকো টিয়ানলং এলপিজি সিলিন্ডার ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের কাজ প্রায় শেষ দিকে। এ কারখানায় বছরের তিন লাখ সিলিন্ডার উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যদিও বছরে আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা ১০ লাখ সিলিন্ডার। এর মধ্যে সবগুলো যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হার ব্যবধানের কারণে আমাদের একটু দেরি হয়েছে। কারণ সরকারের শুল্ক হার জটিলতার কারণে আমাদের সেট আপে কিছুটা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। বর্তমানে সম্পূর্ণ কাঁচামাল আমদানির শুল্ক হার ৩০ শতাংশ, কিন্তু আমরা যদি ফয়েল (ছোট ছোট সাইজে) আকারে আনলে পাঁচ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এর জন্য আমাদের কিছু মেশিন স্থাপন করতে হবে। এর জন্য কিছু শুধু সহায়ক কিছু যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি করা হয়েছে। এগুলো চলে এলে আমরা দ্রুততম সময়ে কারখানা চালু করব। এতে বছরে আমাদের ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা বাড়বে।

উল্লেখ, ২০১৮ সালে জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে কোম্পানিটি উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৩০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ১৫ দশমিক এক শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৫৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ শেয়ার মালিকানা আছে। গতকাল সর্বোচ্চ ২৯ টাকা ৫০ পয়সায় শেয়ার লেনদেন হয়। এছাড়া গত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের আট শতাংশ স্টক এবং দুই শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়।