নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি লিবরা ইনফিউশনস লিমিটেড ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদনে তাদের ইউনিট-২-এর স্থায়ী সম্পদের বিপরীতে কোনো প্রকার অবচয় ধার্য করা হয়নি। এটি ধার্য করা হলে অতিরিক্ত ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৮ টাকা ব্যয় বাড়ত কোম্পানিটির। যেহেতু কোম্পানিটি লোকসানে ডুবছে তাই উল্লিখিত অবচয় ধার্য করা হলে লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়ত। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি ডিএসইতে প্রকাশিত কোম্পানিটির ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ ৮৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা দেখিয়েছে। তবে এ ঋণের পরিমাণ ১০৮ কোটি ২২ লাখ টাকা হবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটির নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস। সে হিসাবে কোম্পানিটি ২৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার ব্যাংকঋণ কম দেখিয়েছিল। কোম্পানিটির নিরীক্ষক আরও জানিয়েছে, আলোচ্য হিসাববছরে কোম্পানিটির ভবন ও ইউনিট নির্মাণের ক্ষেত্রে পুনর্মূল্যায়নজনিত বিলম্বিত করও ধার্য করা হয়নি। এ কারনে অবশ্য নিরীক্ষক তাদের প্রতিবেদনে আপত্তি জানিয়েছে।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে লিবরা ইনফিউশনসের নিট বিক্রয় ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা হলেও কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। যদি কোম্পানিটি ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৮ টাকা অবচয় ব্যয় ধার্য করত তাহলে কোম্পানিটির লোকসান আরও বাড়ত।
আগের হিসাব বছরে নিট বিক্রয় ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা হলেও যেখানে কর-পরবর্তী নিট আয় হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া ৩০ জুন তারিখে কোম্পানিটির মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩০৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এদিকে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সাধরাণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৭৮ পয়সা (লোকসান) আর ৩০ জুন, ২০২০ তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৬১ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১৪ পয়সা (ঘাটতি)। এর আগে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরেও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫ পয়সা। ৩০ জুন, ২০১৯ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৬৯ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হচ্ছে। ১০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ১৫ লাখ এক হাজার ৯২০। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের, ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক ও ৫২ দশমিক ৭৫ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে শেয়ারদর দশমিক ০২ শতাংশ বা ২০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৮৮৪ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৬ হাজার ৬১৮টি শেয়ার মোট ২১৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৫৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দিনজুড়ে শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৮৮৩ টাকা ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৯০৫ টাকায় হাতবদল হয়। এক বছরে শেয়ারদর ৬৬২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে এক হাজার ১৫৯ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।