কাজে যোগ দেননি সিলেট ও হবিগঞ্জের চা-শ্রমিকরা

প্রতিনিধি, সিলেট : মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হলেও কাজে যোগ দেননি সিলেটের ২০টি ও হবিগঞ্জের ২৪ চা-বাগানের শ্রমিকরা। দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে আজও কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন তারা। শ্রমিকরা বলছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।

এদিকে মৌলভীবাজারের ৯০টি বাগানের মধ্যে কিছু কিছু বাগানের শ্রমিকরা কাজ শুরু করলেও অনেক বাগানের শ্রমিক কাজে যোগ দেননি।

এর আগে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গতকাল রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চা-বাগানের শ্রমিক নেতাদের জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিক নেতারা প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রেখে আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই বাগানে ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত নেন।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘চা শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরম শ্রদ্ধা করেন। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই সিদ্ধান্ত। চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রেখে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা তা মেনে নেব। আজ থেকে শ্রমিকরা বাগানে ফিরবেন এবং যথারীতি কাজ করে যাবেন।’

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘আপাতত ১২০ টাকা মজুরিতে কাজে যোগ দিচ্ছেন শ্রমিকরা। আমরা ১৪৫ টাকা মজুরি প্রত্যাখ্যান করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।’

গতকাল রোববার রাতে বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো : প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আজ থেকে কাজে যোগ দেবেন। আপাতত চলমান মজুরি ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর মজুরি বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে।

আসন্ন দুর্গাপূজার আগেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হওয়ার জন্য চা শ্রমিক নেতারা আবেদন করবেন। শ্রমিকদের অন্যান্য দাবি লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করা হবে।

এ সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, সহসভাপতি পংকজ কন্দ, বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা,কমলচন্দ্র ব্যানার্জী, মো. শহীদুল ইসলাম, নির্মল দাশ পাইনকা ও কণ্ঠ তাঁতী উপস্থিত ছিলেন।