নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির আন্দোলনে গুলি চালানো হলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুশিয়ার করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘কেউ গুলি করলে আমরা তাকে ছাড় দেব না। আমরা আত্মাহুতির জন্য প্রস্তুত। আন্দোলনে গুলি চালানো হলে আমাদের আন্দোলনও ভিন্ন প্রক্রিয়ায় হবে। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব।’ গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় রমনা ও শাহবাগ থানা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
জ্বালানি তেল, নিত্যপণ্যের দাম, গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো এবং পুলিশের গুলিতে ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে দলীয় নেতাকর্মী নিহতের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আগে আমরা পল্টনে কর্মসূচি করতাম, পরে মুক্তাঙ্গনে আনা হলো। সেখানেও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারপর আমরা প্রেস ক্লাবের সামনে করেছি, সেখানেও আজ কর্মসূচি পালন করতে দেয়নি। আমরা এখন অলিগলিতে মিছিল করব। সরকারের ঠেকানোর ক্ষমতা থাকবে না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিএনপির মিছিল শুরু হয়েছে। এটা সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত শেষ হবে না। সরকার প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে, রাস্তাঘাটে পুলিশ। সাপ কখন ছোবল দেয়? যখন ভয় পায়। এই আওয়ামী লীগের অবস্থাও সাপের মতো হয়েছে। তারা ভয় পেয়ে ছোবল দিচ্ছে।’
বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন মানবেন নাÑমন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘নতুন নির্বাচনকালীন সরকার হবে, সেই সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তারপর নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেটা আদায় করে নিতে হবে।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা দেনÑঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফাত আলী সপু, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
বিএনপির ৬০০ নেতাকর্মীর আগাম জামিন: এদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, হামলা ও নাশকতার বিভিন্ন মামলায় দেশের বিভিন্ন জেলার বিএনপির প্রায় ৬০০ নেতাকর্মীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ নেতাকর্মীদের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফজলুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সগীর হোসেন লিওন ও মাহবুবুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং ভোলায় ছাত্রদল নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আব্দুর রহিম নিহতের প্রতিবাদ এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল করে বিএনপি। ওই কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মামলা হয়।
জামিন প্রাপ্তদের মধ্যে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের সাবেক সংসদ সদস্যÑআবদুল গফুর ভুঁইয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম মান্নান, বিএনপির আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল, ফেনীর সোনাগাজীর উপজেলা বিএনপির সভাপতি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনসারুল হক, সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, বরগুনার পাথরঘাটার সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, কামরুল ইসলাম রয়েছেন।
এছাড়া ঝিনাইদহ, ফেনী, ঠাকুরগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলার বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ২১৭ জন, ফরিদপুর ৮৫, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৩৫, কিশোরগঞ্জের সদর, পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী থানার ১১৫ জন, বরগুনার পাথরঘাটা ও বামনার ৮৩ জন, নাটোরের লালপুরের ৫৬ নেতাকর্মী জামিন পেয়েছেন।