রংপুর মেডিকেলে রোগী হয়রানির অভিযোগ, দুই কর্মচারী বরখাস্ত

শেয়ার বিজ ডেস্ক: রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট এবিএম রাশেদুল আমীর তাঁর অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গিয়ে বকশিশ সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই চিকিৎসক। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার হƒদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হরিপদ সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অন্য দুজন হলেনÑহাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোস্তফা জামান চৌধুরী ও জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল হাসান। একই সঙ্গে হাসপাতালের দুজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা হলেনÑমাসুদ হোসেন ও ঝর্ণা বেগম। তারা দুজনই চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী।

অভিযোগে চিকিৎসক রাশেদুল আমীর উল্লেখ করেন, ১৭ সেপ্টেম্বর হƒদরোগে আক্রান্ত হলে তার মাকে স্বজনরা হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য তাদের কাছে ২৫০ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মা পরিচয় জানতে পেরে তারা ভর্তি বাবদ ৫০ টাকা নেন। যদিও হাসপাতালে নির্ধারিত ভর্তি ফি ২৫ টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তার মা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ভর্তি ফি না নেয়ার কথা।

অভিযোগে ওই চিকিৎসক বলেন, ভর্তি-পরবর্তী কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) মাকে নেয়া হলে সেখানে কর্মরত দুজন জোর করে তার (চিকিৎসক) ব্যক্তিগত সহকারীর কাছ থেকে ২০০ টাকা নেন।

এ সময় চিকিৎসকের নাম-পরিচয় ও রোগী সম্পর্কে জানানো হলে তারা বলেন, ‘স্যারের মা হোক আর যেই হোক, টাকা দিতে হবে।’ পরবর্তী সময়ে তিনি রাতে হাসপাতালে যাওয়ার পর মায়ের শয্যার পাশে অবস্থানকালে সিসিইউতে কর্মরত ওয়ার্ডবয় পরিচয়ধারী মাসুদ নামের এক ব্যক্তি তার কাছে সরাসরি টাকা দাবি করেন। এ ঘটনা তার কাছে ‘মানসিক পীড়াদায়ক ও অপমানজনক’ বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।

রাশেদুল আমীর অভিযোগে লিখেছেন, ‘আমি নিজে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা হয়েও যদি হয়রানির শিকার হই, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা তো সহজেই অনুমেয়।’ অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ অনুসন্ধান করে হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হয়রানি বন্ধ এবং সেবার মান বাড়াতে সক্রিয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।

অভিযুক্ত মাসুদ হোসেন ও ঝর্ণা বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক শরীফুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ইতোমধ্যে দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।