পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ সম্ভব

বাংলাদেশে কিছু দিন পর পর একটা না একটা ভাইরাস রোগ দেখা যায়। দূষিত বায়ু, অপরিষ্কার পানি, অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রভৃতির কারণে এসব ভাইরাস রোগ বাংলাদেশ থেকে বের হতে পারছে না। বর্তমানে বাংলাদেশে বর্ষার শেষে রাজধানীতে বেড়েছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ। ডেঙ্গু জ্বর একটি এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ। এই মশার কামড় মানব শরীরে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। ডেঙ্গু জ্বর হলে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা হয়। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর আরোগ্য লাভ করে। এছাড়া আক্তান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যম ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে। যে মানুষ একবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে, সে পরবর্তী সময়ে রোগটি হলে সেটি মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

আমাদের দেশে দূষিত নদী, অপরিকল্পিত বাসস্থান শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার কারণে যেখানে-সেখানে ময়লার স্তূপ দেখা যায়; যা থেকে জš§ হয় মশা। এই ভাইরাসটি ছড়ার মূল হোতা হচ্ছে মশা। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীগুলোয় মশার রাজত্ব বেশি। ফলে বর্তমানে রাজধানীতে বর্ষার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন খবরের পত্রিকায় দেখা যায় হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের রোগী ভর্তি হচ্ছে। অনেকে ডেঙ্গু জ্বরে মারা পর্যন্ত যাচ্ছে। কারণ ডেঙ্গু জ্বর হলে লিভার, কিডনি, হার্ট সব দিকেই সমস্যা হতে পারে। তাই খামখেয়ালি না করে সবকিছু পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে আমাদের বাসার চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। মশা বংশবৃদ্ধি করতে পারেÑএমন জিনিস বাসার আঙিনায় রাখা যাবে না। ফুলের টপ, অব্যবহƒত টিনের টবের মধ্যে পানি জমে থাকলে তা পেলে দিতে হবে। রাজধানীকে পরিষ্কার রাখার জন্য সরকার পাশাপাশি  নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। যেখানে-সেখান ময়লার স্তূপ তৈরি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর সরকার সঠিক সময় মশা দমন কীটনাশক ছিটিয়ে মশার বংশবৃদ্ধি নষ্ট করতে হবে। এছাড়া যদিও কারও ডেঙ্গু জ্বর হয়, ভয় না পেয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের সহায়তা  নেবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি দেশ ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবে বাংলাদেশ।

হামিদুর রহমান

মহাখালী, ঢাকা