সফল এবং সৌভাগ্যবান শিক্ষক আসলে কে?

১। ধরুন, কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৭০ নম্বর পাওয়ার উপযুক্ত। কোন একজন শিক্ষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৭৫ নম্বর পেল।

আবার কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ১৫ নম্বর পাওয়ার উপযুক্ত। কোন একজন শিক্ষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৩৫ নম্বর পেয়ে পাশ করে গেল।

প্রশ্ন হচ্ছে, কোন শিক্ষকের প্রচেষ্টা বেশি সফল বা কার্যকর? অবশ্যই, দ্বিতীয় জনের।

২। ধরুন, কোন শিক্ষার্থীর পড়ালেখার ব্যাপারে খোঁজ নেয়ার বিষয়ে তার শিক্ষিত অভিভাবক আছে।

আবার, কোন শিক্ষার্থীর পড়ালেখার বিষয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য তার তেমন কোন অভিভাবক নেই।

প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম পরিস্থিতিতে কোন শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার জন্য দিকনির্দেশনা দরকার।
অবশ্যই, দ্বিতীয় শিক্ষার্থীর।

৩। ধরুন, একজন শিক্ষকের ছাত্ররা অনেক বড় বড় পদে অবস্থান করছে। কিন্তু কখনো তারা মাধ্যমিকের প্রাণপ্রিয় শিক্ষকের খোঁজখবর নেয় না, কোন প্রয়োজনেও তাদের পাওয়া যায় না।

আবার ধরুন, কোন একজন শিক্ষকের ছাত্ররা সবাই বড় বড় পদে নয়, বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছে ( বড় পদ, মেজো পদ, ছোট পদ), কিন্তু বিভিন্ন সময় অসময়ে তারা মাধ্যমিকের প্রাণপ্রিয় শিক্ষকের খোঁজখবর নেয়, যোগাযোগ করে।

এবার বলুন, সৌভাগ্যবান শিক্ষক আসলে কে?
অবশ্যই, দ্বিতীয় জন।

৪। শ্রদ্ধেয় মোঃ মজিবর রহমান শেখ স্যার আসলে এমনই একজন শিক্ষক, যিনি ফেল করার মত ছাত্রকে দিন-রাত এক করে পড়িয়ে পাশ করাতেন। যে ছাত্রের পড়ালেখা দেখার মত কেউ ছিল না, তাকে নিজের সন্তানের মত করে, নিজের কাছে রেখে পড়াতেন। ছাত্রদের জন্য তিনি সময়, শ্রম সব কিছু ঢেলে দিতেন।

মহান আল্লাহ মজিবর স্যারকে নিরাশ করেননি। অবসরের ১০ বছর হয়ে গেছে। এখনো তার বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্ররা (বড় পদ, মেজো পদ, ছোট পদ নির্বিশেষে) তার নিয়মিত খোঁজখবর রাখে, যেকোনো প্রয়োজনে বুক চিতিয়ে হাজির হয়ে যায়। এরকম সফল এবং সৌভাগ্যবান শিক্ষক কজনেই হতে পারে!

লেখক : রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক