ব্যবসায়ীরা যেভাবে লুণ্ঠন করছেন তা অগ্রহণযোগ্য: রামেন্দু মজুমদার

নিজস্ব প্রতিবেদক: অসহনীয় দ্রব্যমূল্যের কারণে জীবনযাত্রা সংকটে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বৈশ্বিক সংকটটা বুঝি, করোনা মহামারির পর বর্তমান সময়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি। সেই সুযোগে দেশের ব্যবসায়ীরা যেভাবে লুণ্ঠন করছেন, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন, সেটা তো অগ্রহণযোগ্য।’ গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের পঞ্চম জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণ-দুর্নীতিমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আমাদের বৈষয়িক উন্নতি প্রচুর হয়েছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে। এটা তো একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল না। যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, সেখানে কি একজন সচেতন শিক্ষকও নেই, যিনি প্রতিবাদ করতে পারেন? এমন কোনো ছাত্র নেই, যিনি প্রতিবাদ করতে পারেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবাদ করি না এজন্য যে, নিজে যদি কোনো বিপদে জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু এভাবে প্রতিবাদ না করতে করতে আমাদের সমাজটা প্রতিবাদহীন সমাজে পরিণত হয়েছে। আজকে যদি প্রতিবাদ না করি, পরবর্তী সময়ে যখন আমার ওপর অন্যায় হবে, তখন প্রতিবাদ করার জন্য পাশে কেউ থাকবে না।’

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। এ সময় রাষ্ট্র ও সরকারকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে আনতে শুধু রাজনৈতিক কোনো মঞ্চ দিয়ে কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতিতে যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা তা দীর্ঘায়িত করতে চান। আর যারা ক্ষমতার বাইরে, তারা চান, কত তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় যেতে পারবেন। অথচ সবাই তারা জনগণের নাম নেন। সেজন্য জনগণের বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনতে হলে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের মতো একটি মঞ্চ গড়ে তুলতে হবে।’

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস প্রমুখ।