রক্তে প্লাটিলেট বাড়ান এবং রক্তের গ্রুপের ডেটাবেজ রাখুন

লেখকঃ রিয়াজুল হক, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

কভিডের আতঙ্ক কমেছে, তবে শুরু হয়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যায়। তাই প্লাটিলেটের মাত্রার উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

কিছু প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে আমরা আমাদের রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে পারি। এসবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ পাকা পেঁপে ও পেঁপে পাতার রস, মিষ্টি কুমড়া ও কুমড়া বীজ, ডালিম, কমলা, কলিজা, পালং শাক, কিছমিছ, ফুলকপি, ডিম, লেবুর রস, আমলকি, অ্যালোভেরার রস, দুধ, বিট।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেই যে এই সব খাবার খেতে হবে, বিষয়টি যেন সেটা না হয়। রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে খাবারের তালিকায় এখনই এগুলোকে পছন্দের তালিকায় রাখা উচিত।

রক্তে প্লাটিলেটের স্বাভাবিক মাত্রা দেড় লাখ থেকে চার লাখ। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্লাটিলেটের পরিমাণ বিশ হাজারের নীচে নেমে গেলে, রক্তক্ষরণের পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এজন্য প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য রক্তের দরকার হয়। ইমার্জেন্সি মুহূর্তে অনেক সময় রোগীর আত্মীয় স্বজনদের রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। অথচ যদি জানা থাকতো যে পাশের মানুষটির রক্তের গ্রুপ এবং রোগীর রক্তের গ্রুপ এক, তাহলে সহজেই রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদানকারী স্থানের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ করে রাখতে পারেন কিংবা ডোনারদের ডেটাবেজ সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।

অনেক বড় বড় সংগঠন, কমিটি, প্রতিষ্ঠানের উচিত তার সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রক্তের গ্রুপের ডাটাবেজ তৈরি করে রাখা। একটা এক্সেল কিংবা ওয়ার্ড ফাইলে ডাটাবেজ তৈরি করা যেতে পারে। এটা করতে বেশি সময়ও লাগবে না। শুধু তৈরি করলেই হবে না, এই ডাটাবেজ কর্মকর্তা-কর্মচারী, সদস্যদের কাছে সরবরাহ করতে হবে। না জেনে যদি রক্তের প্রয়োজনে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করতে হয়, তাহলে সেটা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এছাড়া একই প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের পরিচিত মানুষগুলোর রক্তের গ্রুপ যদি জানা থাকে, তার কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া অনেক সহজ।

ডেটাবেজে বেশি কিছু না থাকলেও অন্তত ব্যক্তির নাম, রক্তের গ্রুপ এবং মোবাইল নাম্বার থাকলেই চলবে। প্রত্যেকের কাছেই মোবাইল আছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও অত্যন্ত সহজ। শুধু ডেঙ্গুর কথা বিবেচনা করে নয়, যেকোনো পরিস্থিতিতেই রক্তের গ্রুপের ডাটাবেজ আমাদের কাজে লাগবে। আর পরোপকারীতার জন্য তো আমরা এমনিতেই সুপরিচিত।

লেখকঃ রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।