প্রতিনিধি, ফরিদপুর: অবৈধ পণ্যের ব্যবসা নির্বিঘœ করতে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিতে নতুন নতুন কৌশল আঁটছেন অপরাধীরা। এমনি একটি কৌশল ফাঁস হলো ফরিদপুরে। ট্রাকে করে পোলট্রি ফিডের বস্তায় অভিনব কায়দায় নিষিদ্ধ পলিথিন পরিবহনকালে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে যেন সাপ বেরিয়ে আসে। পুলিশ তদন্তে নেমে পোলট্রি ফিডের বস্তায় সন্ধান পায় পলিথিনের। এ ঘটনায় এরই মধ্যে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করেছে থানা পুলিশ আর উদ্ধার করেছে ২১ বস্তা পলিথিন।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন।
তিনি জানান, গত ৪ ডিসেম্বর রাতে শামীম হোসেন নামে একজন ট্রাক ড্রাইভার অভিযোগ করেন, তিনি তার ট্রাকে করে ঢাকা থেকে ২০০ বস্তা পোলট্রি ফিড নিয়ে নগরকান্দা জয়বাংলার মোড়ে আসেন। সেখানে রাসেল নামের এক ব্যক্তিকে ২০ বস্তা ফিড দেয়ার কথা। বাকি মাল খুলনায় পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। সে মোতাবেক জয়বাংলা মোড়ে এলে রাসেল গাড়িটি নিয়ে যায় পুরাপাড়া ব্রাহ্মণডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের নির্জন একটি জায়গায়।
সেখানে পরিকল্পিতভাবে তাদের ১০-১২ জনের একটি গ্রুপ অন্য একটি ট্রাক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা ড্রাইভার ও হেলপারকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে সব মালামাল নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় ৩৯৫/৩৯৭ ধারায় একটি মামলা রুজু হয়।
তিনি আরও জানান, তদন্ত শুরু করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে পারেন ওই ট্রাকে আসলে পোলট্রি ফিড ছিল না, ছিল অবৈধ পলিথিন। রাসেল নামে যে ব্যবসায়ীর ২০ বস্তা পলিথিন ছিল, তার নাম রাকিবুল তালুকদার। একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধভাবে পলিথিনের ব্যবসা করে আসছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে রাকিবুল তালুকদারের সহযোগী তামিম মোল্লাকে (২২) আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যনুসারে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রাকিবুল তালুকদার (২১), শাহিন মাতুব্বর (১৮), মনির শেখ (৪০), সুমন শেখকে (১৯) আটক করা হয়। আটককৃতদের বাড়ি জেলার ভাঙ্গা ও নগরকান্দা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। অভিযানকালে ২১ বস্তা (প্রতি বস্তা ৪০-৫০ কেজি) পলিথিন উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার বিকালে আটককৃতদের ফরিদপুরের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এই চক্রের অন্য সদস্যদের আটক ও মাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।