নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানে নগদ অর্থসহ অর্ধকোটি টাকার বেশি সম্পদ ক্ষতি ও লুট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
৭ ডিসেম্বরের ঘটনা তুলে ধরে ড. মোশাররফ বলেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অফিসের নিচে বসিয়ে রাখা হয়। দলের অন্যান্য নেতাদের কয়েকটি কক্ষে আটকে রেখে অসংখ্য টিয়ারগ্যাস, গুলি, সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করে গোটা এলাকাকে রণক্ষেত্র বানিয়ে ফেলে পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্য। তারা দলীয় কর্মীর মত প্রতিপক্ষকে হেয় ও বিপদাপন্ন করার জন্য সাদা ব্যাগে করে নিজেরাই ককটেল নিয়ে মহাসচিবের ও জাসাস কার্যালয়ের টয়লেটে মোট ১৫টি ককটেল রেখে তা উদ্ধারের নাটক করেছে। মিডিয়া ও সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়েছে।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, এদিন অফিস থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, নথিপত্র, ব্যাংকের কাগজপত্র, নগদ অর্থ লুট করা প্রকৃত পক্ষে একটি ডাকাতির ঘটনা। ৭ ডিসেম্বর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার পর পুলিশের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর ও মালামাল লুটে অংশ নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।এই ঘটনায় নগদ অর্থসহ ক্ষতি ও লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৫০ লাখ ৮২ হাজার ৫’শ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো অফিস বা গৃহ তল্লাশির সময় মালিকপক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে রাখার সাধারণ আইন অগ্রাহ্য করে পুলিশ যা করেছে তা হানাদার বাহিনীর আচরণকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনায় জড়িত পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’
৭ ডিসেম্বর ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে চারটি মামলা করেছে বলে জানান ড. মোশাররফ। তিনি বলেন, শুধুমাত্র পল্টন থানায় দায়ের করা একটি মামলায় দলীয় কার্যালয় ও আশপাশ থেকে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীসহ সাড়ে চার’শ নারী ও পুরুষ নেতাকর্মীকে আসামি করে আরও অজ্ঞাত দেড় হাজার থেকে দুই হাজার জনকে আসামি দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাত জন নারী কর্মীও রয়েছেন বলে জানান মোশাররফ। তিনি বলেন, এরপর ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ভোর ৩টার দিকে উত্তরার বাসভবন থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং শাহজাহানপুরের বাসভবন থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে সাদা পোষাকে তুলে নিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
এই ঘটনার পর গত কয়েক দিনে সারা দেশে ১৩’শ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবিলম্বে মহাসচিবসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি ও বানোয়াট মামলা সমূহ প্রত্যাহারের দাবি জানান ড. মোশাররফ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম,সেলিমা রহমান,ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান,মো.শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন,যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।