আমন সংগ্রহে লটারি ও মাইকিং করার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি মৌসুমে অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহে স্থানীয়ভাবে লটারি ও মাইকিং করার নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলাওয়ারি বিভাজন মাঠ পর্যায়ে পাঠানো পরিপত্রে এ-সংক্রান্ত ১৭ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জাতীয়ভাবে গত ১৭ নভেম্বর ধান ও চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে আবার কোনো আনুষ্ঠানিকতার অজুহাতে কোনোক্রমেই সংগ্রহ কার্যক্রম বিলম্বিত করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে পরিপত্রে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ ২০২২-২৩ মৌসুম চলাকালে সংগ্রহ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে অবিলম্বে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভা সম্পন্ন করতে হবে। কৃষকের অ্যাপের বাইরে উপজেলায় লটারি করে ধান সংগ্রহ দ্রুত শুরু ও শেষ করতে হবে। কৃষকের অ্যাপভুক্ত উপজেলায় রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করে সিস্টেমে লটারি করে কৃষক নির্বাচনপূর্বক দ্রুত ধান সংগ্রহ করতে হবে। ধান সংগ্রহের বার্তাটি মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, স্থানীয় কেবল টিভিতে প্রদর্শনের মাধ্যমে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

‘অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭’ অনুসারে ২০২২ সালের আমন মৌসুমে উৎপাদিত ধান ও চাল সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে চাল সংগ্রহের জন্য মিলারদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির পরপরই মিলারদের অনুকূলে চুক্তি করা চালের বরাদ্দপত্র ইস্যু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুলিপি প্রদানপূর্বক নিজ নিজ জেলার ওয়েবপোর্টালে প্রকাশ করতে হবে।

চুক্তিযোগ্য যেসব মিলমালিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করেননি, অথবা চুক্তি সম্পাদন করে কোনও চাল সরবরাহ করবেন নাÑএমন মিল মালিকদের বিরুদ্ধে ‘অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ, ২০২২’ এবং ‘অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭’-এর আওতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেহেতু চলমান সংগ্রহ মৌসুমে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা অপেক্ষা বরাদ্দ কম, তাই জাতীয় পর্যায়ে চাল সংগ্রহ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭০ শতাংশ, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ৯০ শতাংশ এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শতভাগ সম্পন্ন করার জন্য শিডিউল প্রস্তুত করে জেলা, উপজেলা ও গুদামভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি এবং সে অনুসারে সংগ্রহ সম্পন্ন করতে হবে।

হাস্কিং মিলারদের ক্ষেত্রে চুক্তিকৃত চাল সর্টিং করে সংগ্রহ করতে হবে। খাদ্যগুদামে কৃষকবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক যেন কোনোক্রমেই হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সংগৃহীত সব চালের বস্তায় সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী স্টেনসিল প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম যুগপৎভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, সংগ্রহকৃত ধান ও চাল সংরক্ষণে গুদামে স্থান সংকুলান না হলে ‘চলাচলসূচি প্রণয়ন নীতিমালা, ২০০৮’ অনুসারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, মহাপরিচালক (খাদ্য) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক স্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চলাচল সূচি জারি করবেন।

খালি বস্তার স্বল্পতা দেখা দিলে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বস্তার স্বল্পতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংগ্রহ কার্যক্রমে সর্বোচ্চ জবাবদিহি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

সংগ্রহ ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সর্বদা সর্বোচ্চ তৎপর ও সতর্ক থাকবেন। প্রতিদিন বিকাল ৫টার মধ্যে সব আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে ধান ও চাল সংগ্রহের তথ্য ই-মেইলে খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে বলেও জারিকৃত পরিপত্রে বলা হয়েছে।