পাঠকের চিঠি

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভোগান্তি

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করত। মেডিকেল কলেজের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতি তখনও চালু হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। যখন একই দিনে দুটি বা তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, ভাইভার তারিখ দেয়া নির্ধারণ করা হতো, তখন বিপাকে পড়তেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তাদের পৃথক পৃথক ফরম নিতে গুনতে হতো মোটা অঙ্কের টাকা। তাই নানা সমস্যাকে সমাধানের লক্ষ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও সেখানে ঢাবি, রাবি, চবি ও জাবিসহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় একমত পোষণ করেননি। কিন্তু প্রক্রিয়াটি হিতে বিপরীত হয়।

যেখানে ভোগান্তি হ্রাস পায়নি বরং বেড়েছে নানা মানসিক চাপ। সনাতন পদ্ধতিতে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সে ওই বিশ্ববিদ্যালয় তার পছন্দের বিষয় সহজে ভর্তি হতো। কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে পাস করলেও একজন শিক্ষার্থীকে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করতে হয়, যেন সে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চিত করতে পারে। তাছাড়া ভিন্ন ভিন্ন সময় মেরিট লিস্ট প্রকাশ হওয়ার কারণে তাকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হলেও পরবর্তী সময়ে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় পেয়ে গেলে তাকে আগের ভর্তি বাতিল করতে হয়। আলাদা আলাদা আবেদনের জন্য ফি দিতে হয় এবং ভর্তি বাতিলে হয় নানা সমস্যা। এছাড়া সনাতন পদ্ধতিতে মেরিট লিস্ট একবারই প্রকাশ হতো। ফলে শিক্ষার্থীরা সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি নিশ্চিত করতেন। অন্যদিকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আলাদা আলাদা মেরিট লিস্টের কারণে সিট ফাঁকা থাকে। এতে অনেকে ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ার পর ভর্তি হন। গুচ্ছ পদ্ধতিতে আবেদনকারীর নিজ নিজ জেলায় পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও, পরীক্ষা হচ্ছে বিভাগীয় শহরগুলোয়। অধিকন্তু অনেকে নিজ জেলার বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে চান। সে জন্য তারা শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করেন। কিন্তু সেখানে মেরিট লিস্টে না এলে সে আর কোথাও ভর্তি হওয়া সম্ভব নয়।

তাই গুচ্ছ পদ্ধতি সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি। এর ফলে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা, অর্থের অপচয় ও মানসিক চাপ। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়া উচিত।

মোহাম্মদ আল-আমিন

শিক্ষার্থী

লোকপ্রশাসন বিভাগ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়