ভোক্তার অভিযোগ জানানো যাবে পোর্টাল ও অ্যাপে

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রশাসনকে ‘জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়ে এলো নতুন ওয়েব পোর্টাল এবং আগামীতে একটি মোবাইল অ্যাপও চালু করা হবে। গতকাল অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান ‘কনজুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস)’ শীর্ষক এই সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

সিসিএমএস মূলত দুটি অংশে বিভক্ত। অভিযোগ পোর্টাল ও প্রশাসনিক প্যানেল। অভিযোগ পোর্টাল সবার জন্য উš§ুক্ত। ভোক্তারা পোর্টালে (যঃঃঢ়ং://ফহপৎঢ়.পড়স/) গিয়ে নিজ নিজ সচল মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে প্রোফাইল খুলে সহজেই অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ ও সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারবেন। মাস তিনেক পর মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও এ সুবিধা পাওয়া যাবে।

সফিকুজ্জামান বলেন, ইদানীং আমরা দেখেছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একেকটা ভিডিওর মাধ্যমে আমরা চার কোটির বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারছি। এই ভোক্তাদের কাছে যদি সরাসরি যেতে হতো, তাহলে তা অনেক কঠিন হতো। তাই ভাবলাম, একটা অ্যাপ থাকলে মানুষ যে কোনো জায়গা থেকে অভিযোগ করতে পারবে এবং আমরা মনিটরিংটাও ভালোভাবে করতে পারব।

নতুন এ সেবায় অভিযোগ জানানোর জন্য অডিও, ভিডিও, কিংবা যে কোনো ছবি অ্যাটাচ করার সুবিধা আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ভোক্তারা প্রতারিত হয়ে গেলে সরাসরি এসে অথবা ইমেইলে বা হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ করে। ইমেইলে পাঠালে প্রযুক্তিগত কারণে অনেক মিসিং হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে অডিও-ভিডিও প্রভৃতি সংযুক্ত করলে ইমেইল পাঠাতে পারেন না। আশা করি, সেটা হবে না এরপর আর।

নতুন এ সেবা প্রথম তিন মাস পরীক্ষামূলকভাবে শুধু ঢাকা বিভাগে চলবে। এরপর তা সারাদেশের জন্য উš§ুক্ত করে দেয়া হবে।

কেন এখনই সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে না এ প্রশ্নের উত্তরে মহাপরিচালক বলেন, যদি এমন হয় যে এত বেশি ট্র্যাফিক হলো,? সিস্টেম রান করছে না, তখন তো সমস্যা। তাই ঢাকা বিভাগের জন্য তিন মাসের পাইলটিং করে সারা বাংলাদেশে চালু করব। তাছাড়া সারা বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ অভিযোগই ঢাকা বিভাগে।

নতুন এ সেবার মাধ্যমে অধিদপ্তরে অভিযোগের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করে সফিকুজ্জামান বলেন, এই মুহূর্তে অধিদপ্তরে সাড়ে তিন হাজার অভিযোগ পেন্ডিং আছে এবং সেগুলো রাতারাতি নিষ্পত্তি করার মতো লোকবল অধিদপ্তরের নেই। আমরা এখন ডিজিটাল থেকে স্মার্ট যুগে প্রবেশ করছি। এ অ্যাপটাকে ইউজার ফ্রেন্ডলি করা গেলে আমরা স্মার্ট ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।

অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার মহাপরিচালকের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন মানুষ যাতে ঘরে বসে সার্ভিস পায়। জনগণের দোরগোড়ায় প্রশাসন, এটা সরকারের সেøাগান। তা বাস্তবায়ন করতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।

তিনি বলেন, কালকেও দুজন ফোন করেছেন। তারা আগে যে অভিযোগ করেছেন, সেসবের কী অবস্থা তা জানতে চান। তখন আমার নিজেরও খারাপ লেগেছে যে মানুষ অভিযোগ করবে, কিন্তু তার সেই অভিযোগের পেছনে এত দৌড়াতে হবে কেন? আমার কাছে ভালো লাগছে এই কারণে যে, এখন আমরা অনেকখানি জনগণের কাছাকাছি, এই অ্যাপের মাধ্যমে তা আরও সহজ হবে।

রাজধানীর শ্যামলী থেকে অভিযোগ করতে আসা ব্যবসায়ী বিপুল আহমেদ সর্বপ্রথম এই অ্যাপের মাধ্যমে তার অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের বিষয় ছিল গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে।